গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত নয় ইসরায়েল!
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়েছে। এই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে ফিলিস্তিনের হামাস ও প্রতিরোধ যোদ্ধারা। এর আগে, সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দেওয়া গাজা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হয়। তবে এই প্রস্তাবের বিস্তারিত এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠনটি বলছে, তারা চুক্তিটিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে; এ নিয়ে তারা এগোতে চায়। কিন্তু ইসরায়েলকে অবশ্যই স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে হবে। ইসরায়েল সরকার এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, ইসরায়েল চুক্তিতে সম্মত নয়।
এদিকে বুধবার (১২ জুন) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন কাতারে পৌঁছান। হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় কাতারের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র এবং মিসরও রয়েছে। ব্লিংকেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুলরহমান বিন জসিম আল থানির সঙ্গে তিনি বৈঠক করেন। পরে সংবাদ সম্মেলনে এসে কাতারের প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিন বিষয়ে ‘স্থায়ী সমাধানে’র কথা বলেন।
ব্লিংকেন মঙ্গলবার বলেছিলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু চুক্তির বিষয়ে তার অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছেন।
তবে সিএনএন জানায়, নিরাপত্তা পরিষদে চুক্তি পাস হওয়ার পরই জাতিসংঘে ইসরায়েলের দূত হামাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। বাইডেনের এ প্রস্তাবের প্রতি আনুষ্ঠানিক কোনো সমর্থনও জানাননি নেতানিয়াহু।
অপরদিকে, দ্য গার্ডিয়ান লিখেছে, জাতিসংঘের কমিশন অব ইনকোয়ারির (সিওআই) এক প্রতিবেদনে যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের জন্য হামাস ও ইসরায়েল উভয়কে দায়ী করা হয়েছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ৩১ ডিসেম্বর সময় পর্যন্ত বিবেচনা করা হয়েছে। ভুক্তভোগী, প্রত্যক্ষদর্শী, কৃত্রিম উপগ্রহের ছবি ও স্বাস্থ্যসেবা তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন করা হয়।
হামাসের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্যে পরিণত করা এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ক্ষুধাকে অস্ত্র বানানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন। এ সময় আরও ২৫০ জনের বেশি মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় সশস্ত্র যোদ্ধারা।
এর প্রতিক্রিয়ায় গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, আট মাস ব্যাপী এই হামলায় ইসরায়েলের হাতে ৩৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। হামলায় ধংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজা।