ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দিতে প্রস্তুত ম্যাক্রন; তবে...
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজায় বর্বর হামলা ও গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। তাদের অব্যাহত হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৬ হাজারের অধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।
গাজা উত্তর ও গাজা দক্ষিণে অব্যাহত হামলার পর ১০ লাখের অধিক ফিলিস্তিনি আশ্রয় নেয় সীমান্তবর্তী ছোট্ট শহর রাফায়। গত শুক্রবার জনবহুল এই শহরে হামলা না চালাতে আদেশ দেয় আন্তর্জাতিক আদালত (আইসিজে)। তবে আইসিজের রায় উপেক্ষা করে রাফার একটি শরণার্থী শিবিরে বোমা হামলা চালায় দখলদার বাহিনী। এ হামলায় মুহুর্তেই দাউদাউ করে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। নারী ও শিশুসহ নিহত হয় বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি। এ ঘটনায় নতুন করে নাড়া দেয় গোটা বিশ্বকে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় শুরু হয়।
ইসরায়েলের বর্বর এসব হামলায় নতুন করে ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানে আলোচনা শুরু হয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এরই অংশ হিসেবে গতকাল ইউরোপের তিন দেশ স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়। বেলজিয়ামের কর্মকর্তারা বলেছেন, তারাও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য একটি উপযোগী সময়ের অপেক্ষা করছেন।
এদিকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন বলেছেন, তার দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত। তবে সেটি অবশ্যই একটি ‘উপযোগী মুহূর্তে’। মঙ্গলবার জার্মানিতে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইমানুয়েল ম্যাক্রন একথা বলেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, ফ্রান্সের জন্য কোনো লুকোচুরি নেই। আমি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত। আমি মনে করি এই স্বীকৃতি একটি কার্যকর মুহূর্তে হতে হবে।
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি যাতে একটি কার্যকর ফলাফল বয়ে আনে তার জন্য রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, আমি শুধু আবেগতাড়িত হয়ে স্বীকৃতি দেব না।
ইমানুয়েল ম্যাক্রন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সংঘাতে আক্রান্ত বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। তিনি রাফাহ পরিস্থিতিকে ভয়াবহ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, রাফাহতে ইসরায়েলি অপারেশন অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। ম্যাক্রন বলেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে, তবে অবশ্যই তাদের উচিত আন্তর্জাতিক এবং মানবিক আইনকে সম্মান করা।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, ফিলিস্তিন বিষয়ে একটি জরুরি সভা ডাকতে জাতিসংঘে অনুরোধ জানিয়েছে আলজেরিয়া। আমরা এতে সমর্থন জানাই। আমরা আলজেরিয়া এবং নিরাপত্তা পরিষদে আমাদের সমস্ত অংশীদারদের সাঙ্গে একটি যৌথ রেজুলেশনে কাজ করছি যা মানবিক জরুরিতা, যুদ্ধবিরতির শর্ত এবং গাজায় জাতিসংঘের একটি স্পষ্ট ম্যান্ডেট প্রকাশ করে।
সূত্র: আল জাজিরা, আরএফআই
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সমস্যার একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানে কাজ করতে প্রস্তুত ফ্রান্স, আর এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হলো যুদ্ধবিরতি।
গত বছরের ৭ অক্টোবর, ইসরায়েল যখন গাজায় হামলা শুরু করে ফ্রান্স তখন প্রকাশ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছিল।