রাফাহতে ইসরায়েলি অভিযান বন্ধের নির্দেশ আন্তর্জাতিক আদালতের
গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজায় নৃশংস হামলা শুরু করে দখলদার ইসরায়েল। গাজা উত্তর ও গাজা দক্ষিণে ভয়াবহ হামলার পর ১০ লাখের অধিক ফিলিস্তিনি আশ্রয় নেয় মিশরীয় সীমান্ত শহর রাফাহতে। দখলদার বাহিনী আন্তর্জাতিক উদ্বেগ উপেক্ষা করে জনবহুল এই ছোট্ট শহরটিতে ভয়াবহ হামলা শুরু করেছে। তবে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) ফিলিস্তিনের রাফাহ অঞ্চলে সামরিক অভিযান বন্ধ করতে ইসরায়েলকে নির্দেশ দিয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার (২৪ মে) আইসিজে এই নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের প্রেসিডেন্ট নওয়াফ সালাম বলেন, ‘ইসরায়েলকে অবিলম্বে রাফায় সামরিক অভিযান বন্ধ করতে হবে। এই অভিযান রাফাহর বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত করবে এবং তাদের মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে।’
নওয়াফ সালাম আরও বলেন, ‘গত মার্চে আইসিজের শেষ আদেশের পর রাফাহতে মানবিক পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। রাফহর পরিস্থিতি এখন ‘‘বিপর্যয়কর’’।
গাজার বেসামরিক মানুষদের নিরাপত্তায় ইসরায়েল যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, তা যথেষ্ট কি না, এ ব্যাপারে আইসিজে নিশ্চিত নয় বলে সংশয় প্রকাশ করেন নওয়াফ সালাম। তিনি বলেন, ‘রাফাহতে যারা বাস্তুচ্যুত হয়েছে, তাদের ঝুঁকি কমানোর কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে সেখানে অব্যাহত অভিযানে সাধারণ মানুষ আরও বেশি ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছে।’
রাফাহতে অভিযান বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি আইসিজের এই আদেশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে ইসরায়েলকে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে মানবিক সহায়তা প্রবেশের জন্য ইসরায়েলকে রাফা সীমান্ত ক্রসিং খুলে দেয়ার নির্দেশও দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের বিভিন্ন অবৈধ বসতিতে হামলা চালান হামাসের যোদ্ধারা। সে সময় গাজার সীমান্তের চলছিল নোভা মিউজিক ফেস্টিভাল। হামাসের হামলায় ওই ফেস্টিভালে ৩৫০ জন প্রাণ হারান। ওইদিন হামাসের হামলায় সবমিলিয়ে ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকরা নিহত হন।
পরে হামাসের হামলার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত সাড়ে ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি এই হামলায় নিহত হয়েছে, যাদের এক তৃতীয়াংশই শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন ৮০ হাজারের অধিক ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলি হামলায় গাজা এখন পুরিপুরি ধ্বংসস্তুপ। এই ধ্বংসস্তুপের নিচে ১০ হাজারের অধিক ফিলিস্তিনির মরদেহ পচছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।