রাফায় ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকা
কিছুতেই থামছে না ফিলিস্তিনে ইসরায়েরি হামলা। যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ উপেক্ষা করে জনবহুল রাফাহতে বিমান ও স্থল হামলা শুরু করেছে দখলদার ইসরায়েল। এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার রাফা থেকে ইসরায়েলকে সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) আবেদন করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
গতকাল শুক্রবার (১০ মে) জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত এই তথ্য জানিয়েছে। খবর আল জাজিরার।
রাফা হলো মিসর সীমান্তে অবস্থিত গাজার সর্বদক্ষিণের শহর। ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে এই শহরে গাজার ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে ১০ লাখের বেশি মানুষ আশ্রয়গ্রহণ করেছেন। এত মানুষ আশ্রয়গ্রহণ করলেও বারবার রাফায় স্থল অভিযানের হুমকি দিয়ে আসছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এমন পরিস্থিতিতে রাফায় ইসরায়েলি হামলা ঠেকাতে আরও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আইসিজের দ্বারস্থ হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
এর আগে গত ২৯ ডিসেম্বর আইসিজেতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলা দায়ের করে দক্ষিণ আফ্রিকা। মামলার অভিযোগ দক্ষিণ আফ্রিকা বলেছে, গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড গণহত্যামূলক। কারণ এসব কর্মকাণ্ডের লক্ষ্য হলো ফিলিস্তিনি জাতি, ও গোষ্ঠীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশকে ধ্বংস।
এরপর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এই মামলার শুনানিতে গাজায় গণহত্যা কনভেনশনের আওতায় পড়তে পারে এমন কোনো কাজ থেকে বিরত থাকতে এবং ইসরায়েলি সৈন্যরা ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে কোনো গণহত্যামূলক কাজ না করে তা নিশ্চিত করতে ইসরায়েলকে নির্দেশ দেন আদালত।
আইসিজেকে বিশ্ব আদালত নামেও পরিচিত। এটি জাতিসংঘের একটি দেওয়ানি আদালত। সদস্যভুক্ত এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের বিরোধের বিচার করে এই আদালত। তবে এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) থেকে আলাদা। আইসিসি যুদ্ধাপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার করে থাকে। জাতিসংঘের সদস্য হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইসরায়েল— দুই দেশই দুই আদালতের রায় মেনে চলতে বাধ্য।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকার এই অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল। তেল আবিবের দাবি, তারা গাজায় আন্তর্জাতিক আইন মেনেই কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজায় নৃশংস ও বর্বর হামলা চালিয়ে যাচ্ছ ইহুদিবাদী ইসরায়েল। তাদের নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজারের কাছাকাছি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন ৭৯ হাজারের মতো ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।