ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাব পাস জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজায় নৃশংস হামলা শুরু করেছে দখলদার ইসরায়েল। ৭ মাসের অধিক সময় ধরে চলমান এ হামলায় ৩৫ হাজারের অধিক ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭৯ হাজারের মতো আহত হয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। ইসরায়েলের এই বর্বরতায় নতুন করে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার ব্যাপারে প্রস্তাব পাস হয়েছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে। একইসঙ্গে সদস্যপদ দেওয়ার বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে নিয়ে পুনর্বিবেচনার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বানও জানানো হয়েছে পরিষদের পক্ষ থেকে। খবর আল জাজিরার।
শুক্রবার (১০ মে) প্রস্তাবটির ওপর ভোট হয়। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ১৯৩টি সদস্যদেশের মধ্যে ফিলিস্তিনকে নতুন সদস্য করার পক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশসহ ১৪৩টি দেশ। প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট পড়েছে মাত্র ৯টি। গাজায় হামলা বন্ধের জন্য তাগিদ দিয়ে এলেও বরাবরের মতো ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে ভোটদানে বিরত ছিল ২৫টি দেশ।
সাধারণ পরিষদে নিরঙ্কুশ সমর্থন পাওয়ার পরও অবশ্য জাতিসংঘে পূর্ণ সদস্যপদ পাচ্ছে না ফিলিস্তিন। তবে নিপীড়িত জাতিটিকে জাতিসংঘে যুক্ত করার পক্ষে এটি একটি বৈশ্বিক স্বীকৃতি হিসেবে কাজ করবে। এর আগে গত মাসে নিরাপত্তা পরিষদে তোলা একই ধরনের প্রস্তাব খারিজ হয়ে গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগে।
সাধারণ পরিষদের ভোটের মাধ্যমে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ অর্জিত না হলেও তুলনামূলক বাড়তি কিছু সুবিধা ভোগ করবে ফিলিস্তিন। যেমন চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে পরিষদের অধিবেশন কক্ষে অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে আসন পাবে তারা। তবে কোনো প্রস্তাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ মিলবে না তাদের।
ভোটের পর ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব পাস হওয়ার মধ্য দিয়ে এটা প্রমাণ হয়ে গেছে যে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা ও অধিকারের পক্ষে রয়েছে বিশ্ব। একইসঙ্গে তারা ইসরায়েলের দখলনীতির বিপক্ষে।
বিশাল ব্যবধানে ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার এ প্রস্তাব পাসের ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জাতিসংঘের ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত গিলাড এরডান। তিনি বলেছেন, জাতিসংঘ এখন ‘সন্ত্রাসী একটি রাষ্ট্রকে’ স্বাগত জানাচ্ছে।