মানবিক বিপর্যয়ের শঙ্কা
যুদ্ধবিরতি চুক্তি হোক বা না হোক, রাফায় হামলা চালাবে ইসরায়েল
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হলো ফিলিস্তিনের ছোট্ট সীমান্তশহর রাফাহ। গাজা উত্তর ও দক্ষিণে হামলার পর সেখান থেকে পালিয়ে রাফায় আশ্রয় নিয়েছে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। খবর অনুযায়ী সেখানে বর্তমানে ১০ লাখের অধিক মানুষ অবস্থান করছেন। আর হামাসকে ধ্বংস করার নামে জনবহুল এই এলাকাটিতে হামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হোক বা না হোক, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের রাফা শহরে হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালাবে ইসরায়েল।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, জিম্মি চুক্তি হোক বা না হোক, সম্পূর্ণ বিজয় অর্জনের জন্য আমরা রাফায় ঢুকব এবং হামাসকে নির্মূল করব।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) গাজায় নিহত সেনাদের পরিবার এবং জিম্মিদের স্বজনদের তিনি এ কথা বলেন।
নেতানিয়াহু আরও বলেন, লক্ষ্য অর্জনের আগেই আমরা যুদ্ধ বন্ধ করে দেব, এমন ধারণা কোনো বিকল্প নয়। খবর আল জাজিরার।
এদিকে বেশ কিছু জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে গাজায় ৪০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি মুক্তিকামী গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের প্রস্তাব পর্যালোচনা করছে। কায়রোয় সর্বশেষ আলোচনা শেষে কাতারে ফিরে হামাস জানিয়েছে- প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের মতামত জানাব।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, গোষ্ঠীগুলো নেতানিয়াহু এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি এটি শেষ করতে আন্তর্জাতিক চাপ প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়েছে। ইসরায়েলের দুইটি লক্ষ্য হলো হামাসের সামরিক ও শাসন ক্ষমতা ধ্বংস করা এবং সব জিম্মিকে ফিরিয়ে নেয়া।
এদিকে নেতানিয়াহুর এই মন্তব্যের পর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যে যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি চুক্তি হওয়ার একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল তা ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার হামাসের হামলায় নিহত ইসরায়েলি পরিবারের সদস্য এবং উগ্রপন্থি জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী বেন গভিরের সঙ্গে বৈঠক করেন নেতানিয়াহু। এরপর তিনি বলেন, সব লক্ষ্য অর্জিত হওয়ার আগে যুদ্ধ বন্ধ করে দেব এটি আমাদের বিবেচনায় নেই। সম্পূর্ণ জয় পেতে আমরা রাফাতে প্রবেশ করব এবং সেখানে থাকা হামাসের ব্যাটালিয়নকে নির্মূল করব-চুক্তি হোক আর না হোক।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, স্বজন হারানো ইসরায়েলিরা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং নিরাপত্তা পরামর্শক তাচি হানেগবেকি যুদ্ধ বন্ধ না করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে রাফায় হামলা চালালে সবচেয়ে বড় মানবিক বিপর্যয় হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। এজন্য রাফায় হামলা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।