গাজার ধ্বংসস্তুপ অপসারণ করতে সময় লাগবে ১৪ বছর: জাতিসংঘ
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজায় নৃশংস গণহত্যা ও ধংসযজ্ঞ চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। ইসরায়েলি বাহিনীর ৬ মাস ব্যাপী চলমান হামলায় যে বিপুল পরিমাণ ধ্বংসস্তূপ সৃষ্টি হয়েছে তা অপসারণে অন্তত ১৪ বছর সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) জেনেভায় এক ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের মাইন অ্যাকশন সার্ভিসের (ইউএনএমএএস) জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা পেহর লোধাম্মার এ কথা বলেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ইসরায়েলের হামলায় গাজা উপত্যকায় প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ২৩ লাখ জনসংখ্যার পুরো উপত্যকা। সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়া ভবনের সংখ্যা খুবই কম। ইসরায়েলের হামলায় সংকীর্ণ উপকূলীয় অঞ্চলটি একটি ধ্বংসের নগরীতে পরিণত হয়েছে। এখানকার বেশিরভাগ মানুষ গৃহহীন ও ক্ষুধার্ত অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। অনেকে বয়ে বেড়াচ্ছেন নানা রোগব্যাধী। অনেকে রয়েছেন বিভিন্ন রোগের ঝুঁকিতে।
পেহর লোধাম্মার জানিয়েছেন, ইসরায়েলের বোমা হামলায় ঘনবসতিপূর্ণ এই অঞ্চলে অন্তত ৩ কোটি ৭০ লাখ ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা জানি ছুড়ে মারা বোমা, গুলি ও গোলাবারুদের অন্তত ১০ শতাংশ ব্যর্থ হয়। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এসব অবিস্ফোরিত অস্ত্রের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা প্রায় অসম্ভব। ধারণা করা হচ্ছে, যদি ১০০ ট্রাক ব্যবহার করে ধ্বংসস্তূপ সরানো হয়, তবে এসব অবিস্ফোরিত অস্ত্র ও ভবনগুলোর ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করতে অন্তত ১৪ বছর সময় লাগতে পারে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় গত ৭ অক্টোবর থেকে চলা ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছে অন্তত ৩৪ হাজার ৩০৫ ফিলিস্তিনি। আহত কমপক্ষে ৭৭ হাজার ২৯৩ জন। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। দেশটির নৃশংস এ হামলা বন্ধের কোন লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। উপরোন্তু সম্প্রতি ইসরায়েলকে এ ধংসযজ্ঞ চালাতে ১৩ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা প্রশ্নে ভেটো দিয়ে গাজায় গণহত্যা চালানোর আরও সুযোগ করে দিয়েছে ইসরায়েলের সমস্ত অপকর্মের সমর্থক বাইডেন সরকার।