ছবি তুলতে গিয়ে আগ্নেয়গিরিতে পড়ে চীনা পর্যটকের মৃত্যু
জনসংখ্যায় বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়া। দেশটির পূর্ব জাভায় একটি আগ্নেয়গিরির কিনারায় দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে গিয়ে ২৫০ ফুট নিচে পড়ে মারা গেছেন হুয়াং লিহং নামে এক চীনা নারী পর্যটক। তার স্বামী ঝাং ইয়ংয়ের সঙ্গে নীল আগুনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত ওই আগ্নেয়গিরি থেকে সূর্যাদয় দেখার ইচ্ছা ছিল তার।
স্থানীয় সময় শনিবার (২০ এপ্রিল) আইজেন নামে পূর্ব জাভার একটি আগ্নেয়গিরি পর্যটক পার্কে মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটে।
সোমবার (২৩ এপ্রিল) সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, সূর্যদয় দেখার জন্য ওই দম্পতি আগ্নেয়গিরির একেবারে কিনারে চলে গিয়েছিলেন। যে ট্যুরিজম কোম্পানির মাধ্যমে তারা সেখানে গিয়েছিলেন সেই কোম্পানি ট্যুর গাইড বলেছেন, ছবি তোলার জন্য লিহং বারবার গর্তের কিনারে চলে যাচ্ছিলেন। এ সময় বেশ কয়েকবার তাকে সতর্ক করা হলেও শুনছিলেন না তিনি। পরে ফিরে আসার সময় নিজের পোশাকের সঙ্গে পা জড়িয়ে প্রায় ২৫০ ফুট নিচে পড়ে যান তিনি।
প্রসঙ্গত, আইজেন তার নীল আগুনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত, যা আসলে সালফিউরিক গ্যাসের দহন থেকে নির্গত নীল আলো। এর গহ্বরটি কাওয়াহ ইজেন নামে পরিচিত, যার অর্থ একাকী গহ্বর। পর্যটক এবং খনি শ্রমিকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় একটি সাইট এটি। প্রসাধনী থেকে দিয়াশলাই পর্যন্ত অনেক শিল্পেই এখানকার শক্ত হলুদ সালফার ব্যবহৃত হয়। আগ্নেয়গিরিটি থেকে নিয়মিত বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হলেও, তা সীমিত আকারের হওয়ায় সাইটটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রেখেছে ইন্দোনেশিয়া সরকার।
ইন্দোনেশিয়ায় অন্তত ১৩০টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে। লাখ লাখ ইন্দোনেশিয়ান এসব আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি বাস করে এবং কৃষিকাজ করে জীবন ধারন করেন, মূলত উর্বর চাষের মাটির কারণে।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে কাওয়াহ আইজেন পর্যন্ত পর্বতারোহণের সময় মৃত্যু হয় ৫৩ বছর বয়সী এক পোলিশ পর্যটকের। এর আগে ২০১৮ সালে আগ্নেয়গিরিটি বিষাক্ত গ্যাস নির্গত শুরু করার পরে আশপাশের অনেক লোককে তাদের বাড়িঘর খালি করতে বাধ্য করা হয়েছিল এবং কমপক্ষে ৩০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে একজন ৬৮ বছর বয়সী সুইস ব্যক্তি মাউন্ট আইজেনে আরোহণ করতে গিয়ে পড়ে যান। মারা যাওয়ার আগে তিনি শ্বাসকষ্টের কথা জানান।