হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নাকচ নেতানিয়াহুর; রাফাহ দখলের নির্দেশ
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজায় নৃশংস হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। গত চার মাস ধরে চালানো এই তাণ্ডবে প্রাণ হারিয়েছে ২৭ হাজার ৫৮৭ জন ফিলিস্তিনি। এদিকে ১৩৫ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। তবে হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে নাকচ করে দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
গতকাল বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) হামাসের দাবিকে ‘অবান্তর’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি তার দেশের সেনাবাহিনীকে গাজা উপত্যকার দক্ষিণে রাফাহ শহর দখলের নির্দেশ দিয়েছেন। শহরটিতে ১০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে, মধ্যপ্রাচ্য সফরত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর বলেছেন, তিনি নেতানিয়াহুকে উত্তেজনা উসকে দেয় এমন এমন কাজ না করতে এবং এমন ধরনের বক্তব্য না দিতে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন। ব্লিঙ্কেন বলেন তিনি এখনও সমঝোতায় পৌঁছানোর বিষয়ে আশাবাদী।
তবে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইসরায়েলি টেলিভিশনে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানান, তিনি সেনাবাহিনীকে রাফাহ দখল করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, হামাসের সঙ্গে যুদ্ধে ইসরায়েলের পূর্ণ বিজয় অর্জন করতে আরও কয়েক মাস লাগবে।
নেতানিয়াহু বলেন, হামাসের যুদ্ধবিরতির ‘উদ্ভট’ দাবি ইসরায়েলি পণবন্দিদের ফিরে আসার নিশ্চয়তা দেয় না এবং এই ঘটনা আরেকটি গণহত্যাকে অনিবার্য করে তুলবে।
ওদিকে, লেবাননের রাজধানী বৈরুতে হামাসের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা নেতানিয়াহুর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, তার আগ্রাসন চালিয়ে যাওয়ার মনোভাব নিশ্চিত করে, ইসরায়েলের লক্ষ্য ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর গণহত্যা চালিয়ে যাওয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর পর তার পঞ্চম দফা মধ্যপ্রাচ্য সফরে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। তবে তিনি এ বিষয়ে আরও অনেক কিছু করতে হবে বলে সাবধানও করেছিলেন।
এদিকে, আজ বৃহস্পতিবার কায়রোতে নতুর করে আবারও আলোচনা শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসরের একজন কর্মকর্তা।
গত সপ্তাহে হামাস ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে বন্দি বিনিময়ের বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়। এতে গাজায় আরও বেশি সাহায্য পণ্য পাঠানোর আবেদনও জানানো হয়।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও গাজায় মানবেতর জীবনযাপনকারী লাখ লাখ মানুষের জন্য নতুন করে সাহায্যের আহ্বান জানান।