আরাকানে সংঘাত: নিজ নাগরিকদের দেশে ফিরতে বলল ভারত
ফের অশান্ত হয়ে উঠল মায়ানমারের রাখাইন। বিদ্রোহের আগুনে জ্বলছে সে দেশের এই রাজ্য। নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন সেখানকার মানুষ। এমন অবস্থায় দেশের নাগরিকদের রাখাইনে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। শুধু তা-ই নয়, দেশের নাগরিকদের রাখাইন ছাড়ার কথা বলে বিবৃতি জারি করা হয়েছে। একইসঙ্গে রাখাইন প্রদেশে না যেতে নাগরিকদের সতর্কতা জারি করেছে ভারত।
ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এছাড়া আনন্দবাজারের প্রতিবেদনেও একই তথ্য জানানো হয়েছে।
মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার পর ভারত এই প্রথম এই ধরনের সতর্কতা জারি করল।
এনডিটিভি জানায়, নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি, ল্যান্ডলাইনসহ টেলিযোগাযোগের মাধ্যম ব্যাহত হওয়া এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের তীব্র ঘাটতির পরিপ্রেক্ষিতে সকল ভারতীয় নাগরিককে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এ ছাড়া যে সকল ভারতীয় নাগরিক ইতোমধ্যেই রাখাইন প্রদেশে রয়েছেন তাদের অবিলম্বে প্রদেশটি ছেড়ে চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এদিকে, মিয়ানমারে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকারি বাহিনীর ব্যাপক লড়াই চলছে। মিয়ানমারের এই সংঘাতময় পরিস্থিতির প্রভাব বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায়ও পড়েছে। তাদের ছোড়া গুলি ও মর্টারশেল সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে এসে পড়ছে। এতে দুইজন নিহত ও কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এজন্য মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলছেন, পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত আমাদের নিয়ন্ত্রণে। কোনোভাবেই একজন রোহিঙ্গাকেও বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকতে দেবো না।
আজ বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বান্দরবান সীমান্ত পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা ধৈর্য ধারণ করে আন্তর্জাতিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করেছি। প্রধানমন্ত্রীও ধৈর্য ধারণের নির্দেশনা দিয়েছেন, সে অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য, গত পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছে দেশটির বিভিন্ন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর। ২০২১ সালে ক্যুর মাধ্যমে জান্তার রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর এ সংঘাত বেড়ে যায়। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে মিয়ানমারের সঙ্গে।