জিম্মিদের তথ্য দিতে গাজায় লিফলেট বিতরণ ও পুরস্কার ঘোষণা করেছে ইসরায়েল
গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ গণহত্যা ও নির্বিচার বোমাবর্ষণের মধ্যেই হামাসের হাতে আটক বন্দিদের সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করার জন্য গাজাবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইহুদিবাদী ইসরাইল।
গতকাল (শনিবার) তারা বিমান থেকে গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে এ সংক্রান্ত একটি লিফলেট ছড়িয়েছে।
লিফলেটে হামাসের হাতে আটক ৬৯ জন ইসরাইলি বন্দির ছবি ও নাম রয়েছে এবং বলা হয়েছে, যদি কেউ এদের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দিতে পারে তাহলে তাকে পুরস্কার দেয়া হবে।
গত ১০০ দিনেরও বেশি সময় ধরে ইসরাইলের নির্বিচার বোমা হামলায় গাজার প্রায় সব অধিবাসী ঘরবাড়ি হারিয়েছেন। লিফলেটে এসব মানুষকে উদ্দেশ করে বলা হয়েছে, “আপনারা কি নিজেদের বাড়িতে ফিরতে চান? তাহলে এসব পণবন্দির যেকোনো একজন সম্পর্কে তথ্য দিন।”
ইসরাইলি বন্দিদের সম্পর্কে তথ্য দেয়ার জন্য লিফলেটে একটি ফোন নম্বর ও আরবি ভাষায় বন্দিদের ছবি ও নাম সম্বলিত একটি ওয়েবসাইটের লিঙ্ক দেয়া হয়েছে।
কিন্তু গাজাবাসী এই লিফলেটের ব্যাপারে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বলে আল-জাজিরা খবর দিয়েছে। চ্যানেলটিকে তারা বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধ না করা পর্যন্ত পণবন্দিদের উদ্ধার করা সম্ভব নয়।
উত্তর গাজার অধিভাসী আবু আলী বলেছেন, “ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের প্রতিরোধের কারণে তারা তাদের পণবন্দিদের মুক্ত করতে ব্যর্থ হয়ে এখন আমাদের সাহায্য চায়।” তিনি আরো বলেন, “নেতানিয়াহু, তুমি যুদ্ধ বন্ধ করে তোমার পণবন্দিদের ফিরিয়ে নিয়ে যাও।”
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। একই সঙ্গে প্রায় ২৪০ জনকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে যায়। এর পর থেকেই অধিকৃত গাজায় শতাব্দীর নির্মম হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। তাদের হামলায় গাজায় ২৫ হাজারের অধিক মানুষ নিহত হয়েছে। যাদের মধ্যে ১০ হাজারের অধিক শিশু। এছাড়া আহত হয়েছে আরও প্রায় ৬২ হাজারের মতো ফিলিস্তিনি।
প্রায় তিন মাসের অধিক দিন চলা ইসরায়েলি এই বর্বরতায় গাজার ৭০ শতাংশের অধিক বাড়ি-ঘর ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। সেখানকার বিন্দু পরিমাণ জায়গাও নিরাপদ অবশিষ্ট নেই।
ইজরায়েলি বর্বরতা এখানেই সীমাবদ্ধ নেই, তারা বন্দী ফিলিস্তিনিদের শুধু ডায়াপার পরিয়ে ঠান্ডার মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেলে রাখছে। এছাড়া নিহত ফিলিস্তিনিদের কবরও গুড়িয়ে দিচ্ছে।
সূত্র: আল জাজিরা, পার্স টুডে