মার্কিন সেনাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে চলেছে ইরাক
ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক জোটের মিশন বন্ধ করার কাজ শুরু করছে। এজন্য একটি কমিটি গঠন করছে ইরাকি সরকার।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) ইরাকি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির কার্যালয় এক বিবৃতিতে এমন তথ্য জানিয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। রয়টার্সের বরাত দিয়ে ভয়েস অব আমেরিকাও একই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাগদাদে মার্কিন হামলায় একজন মিলিশিয়া নেতা নিহত হন। মার্কিন হামলায় তিনি নিহত হওয়ায় ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক জোটের সেনাদের দেশ থেকে বিতাড়নের তোড়জোড় শুরু করার তথ্য সামনে এলো।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরাকে আন্তর্জাতিক জোটের বাহিনীর উপস্থিতি স্থায়ীভাবে শেষ করবে সরকার। এ উদ্দেশ্যে ব্যবস্থা গ্রহণে দ্বিপক্ষীয় কমিটি গঠনের তারিখ নির্ধারণ করা হবে। এই কমিটিতে সামরিক জোটের প্রতিনিধিরা থাকবেন বলে এক সরকারি কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
বর্তমানে সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ৯০০ এবং ইরাকে ২ হাজার ৫০০ সেনা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পুনরুত্থান ঠেকাতে স্থানীয় সেনাবাহিনীকে পরামর্শ ও সহায়তা করাই এই মিশনের লক্ষ্য।
ইরান সমর্থিত দলগুলোর ওপর প্রধানমন্ত্রী শিয়া আল-সুদানির নিয়ন্ত্রণ বেশ সীমিত। অবশ্য গত বছর তাদের সমর্থনের ওপর ভর করেই দেশের ক্ষমতায় আসেন তিনি। বর্তমানে তার জোট সরকারের ওপর এসব গোষ্ঠীর শক্তিশালী প্রভাব রয়েছে।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদ জানায় ইরাক ও সিরিয়ায় ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলো। গাজায় ইসরায়েলি হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে কিছুটা দায়ী করে তারা। কেননা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলকে একতরফা সব ধরনের সহায়তা দিয়ে আসছে প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রশাসন। এ জন্য ইরাকের মার্কিন সামরিক ঘাঁটি নিশানা করে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলো।
২০০৩ সালে ইরাকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে উৎখাত এবং গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্র নির্মূলের কথা বলে ইরাকে হামলা চালায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী। তবে ইরাকের কাছে এমন কোনো অস্ত্র পাওয়া যায়নি। এরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ ইরাক গড়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও সেখানে রক্তাক্ত গোত্রগত সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
শেষ পর্যন্ত ২০১১ সালে ইরাক থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু বছর তিনেক পরে আইএস ইরাকের বেশকিছু অঞ্চল দখলে নিয়ে নিলে মার্কিন সেনারা আবারও ইরাকে যায়। এরপর ২০১৭ সালে আইএসকে পরাজিত করলেও ইরাকে থেকে যায় মার্কিন সেনারা।