দাউদ ইব্রাহিমের সম্পত্তি নিলামে তুলছে ভারত
ভারতের আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিম। কয়েক দশক ধরে ত্রাস সৃষ্টি করেছে ভারতে। এবার তার শৈশবের বাড়ি নিলামে তুলতে যাচ্ছে ভারত। চলতি সপ্তাহেই শৈশবের বাড়িসহ দাউদ ইব্রাহিমের পরিবারের মালিকানাধীন অন্য সম্পত্তিও নিলাম করা হবে।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। এছাড়া টাইমস নাউ, ইন্ডিয়া টাইমস ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনেও একই তথ্য জানানো হয়েছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের রত্নাগিরিতে থাকা আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিমের শৈশবের বাড়ি এবং তার পরিবারের মালিকানাধীন অন্য তিনটি সম্পত্তি আগামী শুক্রবার নিলাম করা হবে।
আর সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার তথ্য অনুসারে, নিলাম হতে যাওয়া চারটি সম্পত্তিই কৃষি-সংক্রান্ত এবং সেগুলো মুম্বাকে গ্রামে অবস্থিত।
এর আগে স্মাগলার অ্যান্ড ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানিপুলেটর (সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা) আইন (এসএএফইএমএ) এর অধীনে কর্তৃপক্ষ এসব সম্পত্তি জব্দ করে।
এনডিটিভি বলছে, আগামী ৫ জানুয়ারি মুম্বাইয়ে এই নিলাম হবে। গত নয় বছরে দাউদ বা তার পরিবারের ১১টি সম্পত্তি নিলাম করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি রেস্তোরাঁ ৪.৫৩ কোটি রুপিতে বিক্রি করা হয়েছে, ছয়টি ফ্ল্যাট ৩.৫৩ কোটি রুপিতে এবং একটি গেস্ট হাউস ৩.৫২ কোটি রুপিতে বিক্রি করা হয়েছে।
১৯৯৩ সালের মুম্বাই সিরিজ বিস্ফোরণের মূল অভিযুক্ত দাউদ ইব্রাহিম ১৯৮৩ সালে মুম্বাইতে যাওয়ার আগে মুম্বাকে গ্রামে বসবাস করতেন। সিরিজ বোমা বিস্ফোরণে ২৫৭ জন নিহত হওয়ার পর তিনি ভারত ছেড়ে চলে যান।
গত বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে দাউদ ইব্রাহিমের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া বিভিন্ন পোস্টে সেসময় মুম্বাই বোমা হামলার এই মূল পরিকল্পনাকারীকে পাকিস্তানে অজ্ঞাত কিছু মানুষ গত ১৫ ডিসেম্বর বিষপ্রয়োগ করে বলে দাবি করা হয়।
এতে বলা হয়, বিষপ্রয়োগের পর অসুস্থ হয়ে পড়া দাউদ ইব্রাহিম করাচির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার এই মৃত্যুর খবরে উত্তাল হয়ে ওঠে পাকিস্তান ও ভারতের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম; যদিও উৎস যাচাইয়ে এই দাবিটির সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, ১৯৫৫ সালে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রেরও মুম্বাইয়ের দোংরি বস্তি এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন দাউদ ইব্রাহিম। ১৯৯৩ সালের মুম্বাই বিস্ফোরণের পর তিনি ভারত থেকে পালিয়ে যান। তখন থেকে তিনি পাকিস্তানে আত্মগোপনে আছেন বলে অভিযোগ নয়াদিল্লির।
১৯৯৩ সালের ১২ মার্চ সিরিজ বোমা বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে মুম্বাই। এই বিস্ফোরণে অন্তত ২৫৭ জন নিহত এবং ৭০০ জনেরও বেশি আহত হন। ভয়াবহ এই বিস্ফোরণে প্রায় ২৭ কোটি রুপির সম্পত্তি ধ্বংস হয়।
মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারের অনুরোধে বহুল আলোচিত এই বিস্ফোরণ মামলা ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
২০১৭ সালের ১৬ জুন মোস্তফা দোসা এবং আবু সালেমসহ কয়েকজন অভিযুক্তকে এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়। আদালত দাউদ ইব্রাহিমকে মুম্বাই হামলার মূলহোতা বলে অভিযুক্ত করেন।