জান্তা বাহিনীর কাছ থেকে আরাকানসহ ১৪২ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণের দাবি বিদ্রোহীদের
মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সংঘর্ষ চলছে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির। এ সংঘর্ষে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি পেয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীরা। জান্তা বাহিনীর কাছ থেকে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা-অধ্যুষিত পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। রাখাইন ছাড়াও পাশের চীন রাজ্যের পালেতওয়া শহর দখল করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সদস্যরা। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে থাইল্যান্ডভিত্তিক মিয়ানমারের ইংরেজি দৈনিক ইরাবতি।
রাখাইন প্রদেশের ১৭টির মধ্যে ১৫টি শহরের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠি আরাকার আর্মি। পাশাপাশি চীন প্রদেশের পালেতয়া শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ারও দাবি করেছে তারা। গোষ্ঠিটি বলছে, তারা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ১৪২টি অবস্থানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এ ছাড়া উত্তর রাখাইন রাজ্যের ম্রাউক ইউ, পাউকতা ও মংডু শহর এবং দক্ষিণ চীনের পালেতোয়াতে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে।
অন্যদিকে জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হামলায় চীন, ভারত ও থাইল্যান্ড সীমান্তে একের পর এক এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে সামরিক জান্তা। বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২১ সালে ক্ষমতা দখলের পর জান্তা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।
মিয়ানমারে এক ডজনের বেশি সংখ্যালঘু সশস্ত্র জাতিগোষ্ঠী রয়েছে। এসব গোষ্ঠীর অনেকে সীমান্ত অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে। ১৯৪৮ সালে মিয়ানমার স্বাধীন হওয়ার পর সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে তারা। গত অক্টোবরের শেষের দিকে তিনটি সশস্ত্র গোষ্ঠী উত্তরাঞ্চলীয় শান প্রদেশে যৌথভাবে হামলা শুরু করে। ওই প্রদেশের চীন সীমান্তবর্তী বেশ কয়টি শহর এখন বিদ্রোহীদের দখলে। সেখানকার ব্যবসা-বাণিজ্য তারাই নিয়ন্ত্রণ করে।
জাতিসংঘের মাঠপর্যায়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অক্টোবরে বিদ্রোহীরা হামলা শুরুর পর শিশুসহ ২৫০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘ জানায়, দেশজুড়ে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
২০২১ সালে জান্তার সামরিক অভ্যুত্থানে অং সান সু চির সরকার উৎখাত হওয়ার পর ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস’ (পিডিএফ) গঠিত হয়। তারা মিয়ানমারের উত্তর ও পূর্বে সেনাবাহিনীর ওপর হামলা শুরু করে। গত সপ্তাহে পিডিএফ যোদ্ধারা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানায়, পূর্বাঞ্চলীয় কায়াহ রাজ্যের রাজধানীর কিছু অংশ তারা নিয়ন্ত্রণ করছে। পুরো শহর থেকে জান্তা বাহিনীকে বিতাড়ন করতে তারা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।