হামাসের হামলার পর বয়ফ্রেন্ড বেঁচে ফিরবেন ভাবতে পারেননি থাই তরুণী
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাস নজিরবিহীন হামলা চালায়। এ ঘটনায় ১২০০ মানুষ নিহত হয়। তবে হামাসের এ হামলার পরও ব্রয়ফ্রেন্ড বেঁচে আছেন, তা ভাবতে পারেননি থাইল্যান্ডের তরুণী কিতিয়া থিউংসিয়াং। তাঁর আশঙ্কা ছিল, হামলায় হয়তো তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু তাঁর আশঙ্কাকে ভুল প্রমাণিত করে ফিরে এসেছেন উইচাই কালাপাত।
গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তির অধীনে প্রথম দফায় ২৫ জন জিম্মি পেয়েছে এবং তাদের মধ্যেই আছেন কিতিয়ার বয়ফ্রেন্ড উইচাই। এতে কিতিয়ার আনন্দের সীমা নেই। বিবিসিকে কিতিয়া বলেন, উইচাইয়ের সঙ্গে মিলনের জন্য অধীর অপেক্ষায় আছেন তিনি।
গত শুক্রবার গাজা উপত্যকায় হামাসের কাছ থেকে মুক্তি পাওয়া ১০ জন থাই জিম্মির ছবি টেলিভিশনে দেখেছেন তিনি। আর সেখানেই উইচাইকে চিনতে পেরেছিলেন। হামাসের হামলায় নিহত থাই নাগরিকদের মধ্যে উইচাইও থাকতে পারেন বলে কিতিয়ার মনে ভয় ছিল।
ইসরায়েলে কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়া উইচাইকে আগামী বছর বিয়ের পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন কিতিয়া। কিন্তু গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার দুই দিন পর হৃদয়ভাঙা খবর পান তিনি। হামাসের হামলায় নিহত অন্তত ৩০ জন থাই নাগরিকের মাঝে উইচাইও ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল তখন। সামাজিক প্ল্যাটফর্মেও শোক প্রকাশ করে বার্তা দিয়েছেন কিতিয়া।
কিন্তু ইসরায়েলের প্রকাশিত নিহতের তালিকায় থাকা বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে উইচাইয়ের নাম দেখতে পাননি তিনি। যন্ত্রণাদায়ক অপেক্ষার পর কেবল সপ্তাহখানেক আগে তিনি জানতে পারেন নিহতের তালিকায় নয়, তার বন্ধুর নাম রয়েছে হামাসের হাতে বন্দী বিদেশি নাগরিকদের তালিকায়। সেখানে জিম্মি ২৬ জন থাই নাগরিকের একজন উইচাই।
অবশেষে তিনি উইচাইকে জীবন্ত দেখতে পান একটি ছবিতে। ইসরায়েলের একটি হাসপাতালের পথে থাকা বন্দীদের বহনকারী গাড়িতে উইচাইকে খুঁজে পান কিতিয়া। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘আমি অনেক আনন্দিত। ভয় হচ্ছিল যে, মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের মধ্যে হয়তো উইচাই থাকবে না। আমি প্রথমেই চাই, সে মানসিকভাবে সেরে উঠুক। তারপর থাইল্যান্ড ফিরে আসুক। অনেক দিন ওর জন্য অপেক্ষা করেছি। এখন আমি আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে পারব।’
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন প্রথমে বলেছিলেন, ১২ জন থাই নাগরিককে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তবে যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতাকারী কাতার সরকারের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই সংখ্যা ১০। চার দিনের যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুযায়ী, ১৫০ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুকে মুক্তির বিনিময়ে গতকাল শুক্রবার ২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের মধ্যে ১২ জন থাইল্যান্ডের নাগরিক, বাকিরা ইসরায়েলের।
থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের মুক্তিপ্রাপ্ত নাগরিকদের ইসরায়েলি হাসপাতালে স্থানান্তর করার পর ৪৮ ঘণ্টার জন্য চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রাখা হবে। এই সময়ের মধ্যে তাঁদের সঙ্গে আত্মীয়স্বজন দেখা করতে পারবেন না।