আকস্মিক যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি বিলম্বিত করল ইসরায়েল

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক জার্নাল আন্তর্জাতিক জার্নাল
প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০২৩, ১১:৫৩ AM

কাতারের মধ্যস্থতায় ইহুদিবাদী ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের মধ্যে স্বাক্ষরিত বন্দি বিনিময় চুক্তির বাস্তবায়ন একদিন পিছিয়ে গেছে বলে দাবি করেছে তেল আবিব। ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের চেয়ারম্যান টিজাচি হানেগবি বলেছেন, শুক্রবারের আগে কোনো বন্দি মুক্তি পাচ্ছে না।

এর আগে হামাসের সিনিয়র নেতা মূসা আবু মারজুক গতকাল (বুধবার) বলেছিলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় বন্দি বিনিময় চুক্তির বাস্তবায়ন শুরু হবে। মারজুকের ওই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইসরাইলি কর্মকর্তাও বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন।

কিন্তু বুধবার রাতে হানেগবি এক বিবৃতিতে জানান, বন্দি বিনিময় চুক্তি নিয়ে আলোচনায় এখনও অগ্রগতি হচ্ছে। তিনি বলেন, “সব পক্ষের মধ্যে হওয়া মূল সমঝোতা অনুযায়ী বন্দি বিনিময় শুরু হবে এবং তা শুক্রবারের আগে সম্ভব নয়।”

ইসরাইলের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা এই আকস্মিক বিলম্বের কারণ না জানালেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইহুদিবাদী কর্মকর্তার বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরাইল জানিয়েছে, যে চুক্তি নিয়ে এত তোড়জোড় তাতে এখনও ইসরাইল বা হামাসের কোনো কর্মকর্তা স্বাক্ষর করেননি। উভয় পক্ষের দায়িত্বশীলরা এতে স্বাক্ষর করার পরই তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হবে।

ওই অজ্ঞাত কর্মকর্তা বুধবার রাতে টাইমস অব ইসরাইলকে বলেন, পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চুক্তিটিতে উভয় পক্ষ স্বাক্ষর করবে এবং এরপর শুক্রবার প্রথম বন্দিরা মুক্তি পাবে।

এর আগে ইসরাইলের ১২ নম্বর চ্যানেল দাবি করেছিল, ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ডেভিড বারনেয়া প্রথম পর্যায়ে মুক্তি পেতে যাওয়া ইসরাইলি বন্দিদের একটি তালিকা হাতে পেয়েছেন। কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা ইহুদিবাদী দৈনিকটিকে বলেছেন, এ ধরনের কোনো তালিকা হাতে পাওয়া গেছে বলে তিনি মনে করছেন না। 

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর আল আকসা তুফান নামে ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এতে ১২০০ এর মতো লোক নিহত হয়, যার প্রায় সাড়ে তিনশ জন ইসরায়েলি সেনা ছিলো। এছাড়া ২০০ এর অধিক লোককে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস। এর প্রতিবাদে ওইদিনই যুদ্ধ ঘোষণা করে শতাব্দীর বর্বর হামলা চালায় দখলদার ইসরায়েল। এই হামলায় এখন পর্যন্ত ১৪ হাজার ৩০০ এর অধিক বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৬ হাজারের বেশি শিশু রয়েছে। এছাড়া নারী রয়েছে ৪ হাজারের অধিক।

ইসরায়েলি এই নৃশংস হামলায় থমকে যায় মানবাতাবাদী বিশ্ব। গাজায় অমানবিক বোমাবর্ষণে শিশুদের হত্যা করা দেখে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে যুদ্ধবিরতির আবেদন আসে। যদিও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত নয়। তবে অনেক আলোচনা, জল্পনার পর অবশেষে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তিতে সম্মত হয় দখলদার দেশটি। যদিও আজ সকাল ১০টা থেকে বন্দি বিনিময় ও যুদ্ধবিরতি হওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু কূটবাদী ইসরায়েল আকস্মিকভাবে যুদ্ধবিরতি ১ দিন পিছিয়ে দেয়।