কী হচ্ছে লাদাখে?

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক জার্নাল আন্তর্জাতিক জার্নাল
প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:২৫ PM

বিক্ষোভে উত্তাল ভারতের হিমালয়াঞ্চলীয় অঞ্চল লাদাখ। অঞ্চলটিকে পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদার দাবির আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হওয়ার পর কারফিউ জারি করা হয়েছে। বুধবারের অগ্নিগর্ভ বিক্ষোভে আরও বহু মানুষ আহত হয় এবং ভারতের শাসক ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) একটি স্থানীয় অফিস আগুনে জ্বালানো হয়।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে বিবিসি।

সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া কার্যকরী ব্যক্তি সোনাম ওয়াংচুক সহিংসতা উসকানির অভিযোগে দায়ী, যা তিনি অস্বীকার করেছেন।

লাদাখ, যেখানে মুসলিম ও বৌদ্ধ জনসংখ্যা রয়েছে, ২০১৯ সালে জম্মু-কাশ্মীর থেকে আলাদা করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তবে বৌদ্ধদের ঘনবসতি লেহ অঞ্চলে ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কারগিল জেলায় দীর্ঘদিন ধরে বিশেষ অধিকার ও স্বায়ত্তশাসনের দাবির আন্দোলন চলে আসছে। ২০১৯ সালের পরে উভয় সম্প্রদায় একত্র হয়ে লাদাখের পূর্ণ রাজ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও স্বায়ত্তশাসনের দাবি করছে।

মঙ্গলবার ও বুধবারের সংঘর্ষে পুলিশ গুলি ও কাঁদুনে গ্যাস ব্যবহার করে, যাতে আহত হন অনেক প্রতিবাদী বিক্ষোভকারী। চারজন গুরুতর আহত হয়ে মারা যান। সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‌‘নিজের প্রতিরক্ষায় পুলিশের গুলি চালাতে হয়েছে, যার ফলে দুঃখজনকভাবে কিছু প্রাণহানি হয়েছে।’

ওয়াংচুক ১২ সেপ্টেম্বর থেকে চলা অনশন বন্ধ করে শান্তির আহ্বান জানিয়েছেন, বলছেন সহিংসতা ‘আমাদের আন্দোলনের ক্ষতি করছে।’ তিনি দাবী করেছেন, সহিংসতার জন্য তিনি দায়ী নন; বরং যুবকদের হতাশা ও দীর্ঘকাল বেকারত্ব তাদের রাস্তার দিকে ঠেলে দিয়েছে।

লাদাখ বৌদ্ধ সমিতির সভাপতি ছেরিং দর্জে লক্রুক বলেন, ‘লাদাখের যুবকরা সহিংসতার বিপক্ষে। তবে সরকার বারবার সংলাপ প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার কারণে তারা হতাশ।’

লাদাখে ভারত বড় মাত্রায় সেনা মোতায়েন রেখেছে, যেখানে চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ সীমান্তও রয়েছে। ২০২০ সালে গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় ও চার চীনা সেনা নিহত হয়।

সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, সোমবার ও মঙ্গলবার স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পরও কিছু রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ব্যক্তিরা অপ্রসন্ন ছিলেন। 

লাদাখের লেফটেন্যান্ট গভর্নর কভিন্দার গুপ্তা বলেন, ‘সাম্প্রতিক সহিংসতা একটি ষড়যন্ত্রের গন্ধ দেয়।’

আগামী বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার নতুন আলোচনা হবে, এবং ৬ অক্টোবর কেন্দ্রীয় সরকারের কমিটি স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবে।