বড় স্বস্তি পেলেন নেতানিয়াহু

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলায় নির্ধারিত সাক্ষ্যগ্রহণ স্থগিত করেছে জেরুজালেম জেলা আদালত। তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, জালিয়াতি এবং আস্থাভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে—যা প্রমাণিত হলে তাকে কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে হতে পারে।
রোববার (২৯ জুন) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, রোববার আদালতের এই সিদ্ধান্তের খবর প্রকাশ করেছে ইসরায়েলি দৈনিক ইদিওথ আহারনোথ। সেখানে জানানো হয়, নেতানিয়াহুর অনুরোধে অনুষ্ঠিত এক রুদ্ধদ্বার শুনানির পর আদালতের এই রায় এসেছে।
ওই শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা প্রধান শ্লোমি বিন্ডার এবং গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের পরিচালক ডেভিড বারনিয়া।
আদালত বলেছে, “নেতানিয়াহুর অনুরোধে দেওয়া ব্যাখ্যায় পূর্বের তুলনায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নতুন উপাত্ত ও পরিবর্তন এসেছে। তাই আমরা আংশিকভাবে তার আবেদন মঞ্জুর করছি এবং আপাতত ৩০ জুন ও ২ জুলাই নির্ধারিত তার সাক্ষ্যগ্রহণ বাতিল করছি।”
নেতানিয়াহু মূলত তার ট্রায়ালের শুনানি দুই সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছিলেন, তবে অ্যাটর্নি জেনারেল গালি বাহারাভ-মিয়ারা সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন, কারণ তার মতে এতে পর্যাপ্ত কারণ দেখানো হয়নি।
এদিকে নেতানিয়াহুর সাক্ষ্যগ্রহণ বাতিলের বিষয়ে আদালতের এই সিদ্ধান্ত এসেছে এমন এক সময়ে যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার নেতানিয়াহুর বিচার বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এই বিচারকে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে “ডাইনি শিকার” করার মতো কাজ বলেও আখ্যা দিয়েছেন।
মূলত নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ঘুষ, জালিয়াতি এবং আস্থাভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে, যেগুলো প্রমাণিত হলে তার কারাদণ্ড হতে পারে। তিনি বর্তমানে তিনটি মামলায় অভিযুক্ত— কেস ১০০০, ২০০০ ও ৪০০০।
এই মামলাগুলোর অভিযোগপত্র ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে জমা দেন ইসরায়েলের অ্যাটর্নি জেনারেল। আর ২০২০ সালের ২৪ মে থেকে মামলার বিচারকার্য শুরু হয়। নেতানিয়াহু ইসরায়েলের ইতিহাসে প্রথম বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, যিনি ফৌজদারি মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
অবশ্য নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে শুধু দুর্নীতি নয়, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগও রয়েছে। গাজায় গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ২০২৪ সালের নভেম্বরে নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৫৬ হাজার ৫০০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।