বাংলাদেশের সঙ্গে নতুন গঙ্গা চুক্তি চায় ভারত

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ জুন ২০২৫, ০৬:০৩ PM

আগামী বছর মেয়াদ শেষ হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারতের গঙ্গা নদীর পানিবণ্টন সংক্রান্ত চুক্তির। এ অবস্থায় নিজেদের ‘স্বার্থ ও বর্তমান উন্নয়নমূল্য’ বিবেচনায় নিয়ে নতুন চুক্তির ভাবনা শুরু করেছে নয়াদিল্লি।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ইকোনোমিক টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু নদ চুক্তি বাতিলের পর এবার বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার বিদ্যমান গঙ্গা চুক্তির বিকল্প বা এতে সংশোধন আনার বিষয়ে চিন্তা করছে ভারত।

প্রসঙ্গত, গঙ্গার পানি বণ্টন নিয়ে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৩০ বছরের জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালে। নতুন চুক্তির ক্ষেত্রে পারস্পরিক সমঝোতার প্রয়োজন হলেও ভারত এখন সম্পূর্ণ নতুন একটি কাঠামোর ভাবনায় রয়েছে, যেখানে তাদের সাম্প্রতিক উন্নয়ন কার্যক্রমকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।

গঙ্গা পানি চুক্তি কী?

সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ভারতের সঙ্গে গঙ্গা নদীর পানি বণ্টনের একটি কাঠামো তৈরি করেছিলেন। এতে বলা হয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গের ফারাক্কা বাঁধে, প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত পানির প্রবাহ নিশ্চিত করা হবে।

মূলত ফারাক্কায় পানি বন্টন নিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল সেটি নিরসনে এ চুক্তিটি হয়।

ভারত ১৯৭৫ সালে ফারাক্কা বাঁধ সচল করে। এই বাঁধের মাধ্যমে গঙ্গা থেকে পানি হুগলি নদীতে নিয়ে যাওয়া হয় যেন কলকাতা বন্দর নৌ চলাচলের উপযোগী থাকে।

গঙ্গা চুক্তির মাধ্যমে উজানের দেশ ভারত ভাটির দেশ বাংলাদেশকে কথা দেয় তারা ফারাক্কা বাঁধে পানি সরবরাহ ঠিক রাখবে। এই বাঁধটি তৈরি করা হয়েছে বাঘিরথি নদীতে। যা বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে ভারত কলকাতা বন্দর ট্রাস্টের জন্য গঙ্গার ৪০ হাজার কিউসেক পানি একটি খালের মধ্যে নিয়ে যায়।

চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি বছর ১১ মার্চ থেকে ১১ মে পর্যন্ত ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ই প্রতি ১০ দিনের জন্য ৩৫ হাজার কিউসেক পানি পাবে। কিন্তু ভারত এখন নতুন চুক্তি করে এই সময়টায় আরও ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কিউসেক বেশি পানি চায়। তাদের দাবি এখন যেহেতু তাদের কৃষির প্রসার ঘটেছে তাই আরও বেশি পানির প্রয়োজন।

তারা এখন তাদের সেচ, বন্দর রক্ষণাবেক্ষণ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আগের চেয়ে বেশি পানি চেয়ে নতুন চুক্তি সাজাচ্ছে।

ভারতের কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এক্ষেত্রে একমত পোষণ করেছে বলে জানিয়েছে ইকোনোমিক টাইমস। তাদের মতে, এখন তাদের যে পরিমাণ পানির প্রয়োজন সেটি বর্তমান গঙ্গা চুক্তি মেটাতে পারছে না।

সূত্র: ইকোনোমিক টাইমস