ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ

বিশ্ববাজারে লাফিয়ে বাড়ছে জ্বালানি তেলের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক জার্নাল আন্তর্জাতিক জার্নাল
প্রকাশিত: ২৩ জুন ২০২৫, ০৯:৫৬ AM

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর বিশ্ববাজারে হঠাৎ করে লাফিয়ে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় হামলার পর, রোববার (২২ জুন) রাতেই যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে তেলের ফিউচার দামে উল্লেখযোগ্য উর্ধ্বগতি দেখা যায়।

সোমবার (২৩ জুন) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মূল্য ৩ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি ব্যারেলের দাম দাঁড়িয়েছে ৭৬ দশমিক ৪৭ ডলার। আর আন্তর্জাতিক মানদণ্ড হিসেবে পরিচিত ব্রেন্ট তেলের দাম ৩ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৭৪ দশমিক ৫৯ ডলার।

তবে, শেয়ারবাজারে সার্বিকভাবে বিপরীত চিত্র দেখা গেছে। ২৫০ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে ডাও ফিউচারস সূচক। এছাড়া, এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ফিউচারস এবং নাসডাক ফিউচারস— উভয় সূচকই প্রায় শূন্য দশমিক ৬ থেকে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে।

এদিকে বিশ্ববাজারে এই অস্থিরতার মধ্যেই মার্কিন ডলারের মান বেড়েছে প্রায় শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ। বৈশ্বিক সংকট ও অনিশ্চয়তার সময়ে ডলারের মান সাধারণভাবে বৃদ্ধি পায়। তবে, ট্রাম্প প্রশাসনের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির কারণে এই প্রবণতা এবার কতটা স্থায়ী হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে নতুন মাত্রা ও মার্কিন পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় নতুন করে উদ্বেগ ছড়াচ্ছে বাজারে, যার প্রভাব সরাসরি গিয়ে পড়ছে জ্বালানি ও বিনিয়োগ খাতে।

রোববার (২২ জুন) বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ হরমুজ প্রণালি বন্ধের অনুমোদন দিয়েছে ইরানের পার্লামেন্ট। এখন এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ।

মার্কিন জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের মতে, বিশ্বব্যাপী তেল ও গ্যাসের চাহিদার প্রায় ২০ শতাংশ সরবরাহ করা হয় এই হরমুজ প্রণালি দিয়ে। ফলে, এ সমুদ্রপথটি বন্ধ হয়ে গেলে চরম প্রভাব পড়বে বিশ্ববাজারে। এমনকি যেসব দেশ উপসাগরীয় দেশগুলো থেকে পেট্রোল আমদানি করে না, তাদের ওপরও এর প্রভাব পড়বে। কারণ, সরবরাহ ব্যাপকভাবে হ্রাস পেলে বিশ্ব বাজারে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাবে তেল ও গ্যাসের দাম।
 
১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সালের মধ্যে ইরান-ইরাক সংঘাতের সময় উভয় দেশই উপসাগরে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছিল যা ট্যাঙ্কার যুদ্ধ নামে পরিচিত, কিন্তু হরমুজ কখনোই সম্পূর্ণরূপে বন্ধ ছিল না। এই প্রণালি অতিক্রম না করে উপসাগর থেকে সমুদ্রপথে কিছু পাঠানোর কোনো উপায় নেই।