হামলা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল; কড়া হুঁশিয়ারি ইরানের

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘাত আরও তীব্র আকার নিচ্ছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই ইরানে হামলা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছে, আর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় তেহরান দিয়েছে কঠোর হুঁশিয়ারি।
শুক্রবার (২০ জুন) আল জাজিরার লাইভ আপডেট প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ এক বিবৃতিতে জানান, ইরানের ‘শাসনব্যবস্থার প্রতীক’ হিসেবে চিহ্নিত লক্ষ্যবস্তুতে হামলা জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব হামলার উদ্দেশ্য হচ্ছে ইরান সরকারকে দুর্বল করে ফেলা।
তিনি আরও বলেন, আমরা ইরানের শাসনব্যবস্থার সব প্রতীক ও জনগণের ওপর দমন-পীড়নের জড়িতদের, যেমন বাসিজ (মিলিশিয়া) এবং রেভল্যুশনারি গার্ডের মতো ক্ষমতার কেন্দ্রগুলোতে আঘাত হানব।
এদিকে, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, ইসরায়েল যদি আক্রমণ চালিয়ে যায় তবে ইরান আরও জোরালো জবাব দেবে। সংঘাত বন্ধ করার একমাত্র উপায় ইসরায়েলের বিমান হামলা বন্ধ করা।
তিনি আরও বলেন, আমরা সর্বদা শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে এসেছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে, স্থায়ী শান্তি কেবল তখনই সম্ভব হবে যদি ইহুদিবাদী শত্রুরা তাদের শত্রুতা বন্ধ করে এবং তাদের সন্ত্রাসী উস্কানি বন্ধ করার দৃঢ় নিশ্চয়তা প্রদান করে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট সতর্ক করে বলেন, ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর আগ্রাসন না থামালে ইরান আরও কঠোর জবাব দেবে। সেই জবাব এমন হবে, যা আগ্রাসনকারীকে এ দেশের ওপর হামলার জন্য অনুতপ্ত করবে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন দিনগত রাত হঠাৎ ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানে রাজধানী তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও আবাসিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইহুদিবাদী সেনারা।
হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সদরদপ্তরের কমান্ডার ও বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশিদ ও ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ অন্তত কয়েকশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
ইসরায়েলের হামলার পর পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে শুক্রবার রাতে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩ নামে’ অভিযান শুরু করে ইরান। তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ভেদ করে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে। এতে হতাহত কম হলেও ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। ইরানের হামলার ভয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন ইহুদিবাদীরা। দুই দেশের মধ্যে সংঘাত এখনও চলমান রয়েছে।