অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জরুরি পদক্ষেপ

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:২৩ PM

দেশের বিভিন্ন জেলায় গবাদিপশুর মধ্যে অ্যানথ্রাক্স (তড়কা) রোগের প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জরুরি ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

আজ রবিবার (০৫ অক্টোবর) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. মামুন হাসান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় গবাদিপশুর মধ্যে অ্যানথ্রাক্স (তড়কা) রোগের প্রাদুর্ভাবের কারণে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের সমন্বয়ে জরুরি কার্যক্রম শুরু করেছে। গবাদিপশুর টিকাদান, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, উঠান বৈঠক, পথসভা, লিফলেট বিতরণ ও মাইকিংসহ সচেতনতা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন প্রকাশের মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করছে এবং মাঠ পর্যায়ে আক্রান্ত এলাকা পর্যবেক্ষণ, অসুস্থ পশু জবাই প্রতিরোধ ও খামারের প্রতিটি পশুকে টিকার আওতায় আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। “ওয়ান হেলথ” কর্মসূচির আওতায় স্থানীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে জনসচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রমও চালানো হচ্ছে।

কর্মকর্তারা নিয়মিত উঠান বৈঠক ও প্রশিক্ষণ কর্মশালার মাধ্যমে জনগণকে পরামর্শ দিচ্ছেন—অসুস্থ পশু জবাই না করা, মৃত পশু খোলা জায়গায় বা পানিতে না ফেলা, বরং গভীরভাবে মাটিচাপা দেওয়া এবং যেকোনো পশুজনিত অসুস্থতার ক্ষেত্রে দ্রুত নিকটস্থ ভেটেরিনারি হাসপাতাল বা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা। রংপুর ও গাইবান্ধা জেলাকে বেশি আক্রান্ত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে বিশেষ টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান (এলআরআই) রংপুর বিভাগ থেকে প্রায় ৩০ লক্ষ অ্যানথ্রাক্স টিকা সরবরাহ করা হবে, যার মধ্যে ২০ লক্ষ টিকা রংপুর ও গাইবান্ধা জেলাতে পাঠানো হবে। রংপুরের নয়টি উপজেলায় ১,৬৭,০০০ গরুতে টিকা প্রয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ২৬,৪০০ গরুতে টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া আক্রান্ত এলাকায় গরু পুঁতে ফেলা, মাইকিং, উঠান বৈঠক এবং লিফলেট বিতরণ কার্যক্রমও সম্পন্ন হয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ১৫,০০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে এবং ৫টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। রক্তের ১১টি নমুনা পরীক্ষায় সবই নেগেটিভ এসেছে, তবে সংগৃহীত ১১টি মাংসের নমুনার মধ্যে ১০টি পজিটিভ পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি মূল্যায়নের জন্য রংপুর ও গাইবান্ধা জেলায় উচ্চ পর্যায়ের অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জানাচ্ছে, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় প্রশাসন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, জনপ্রতিনিধি ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।