ভর্তুকি দিয়েও আমদানির চেয়ে দ্বিগুণ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে খেজুর

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ মার্চ ২০২৪, ১০:১২ AM

আর মাত্র সপ্তাহখানেক বাকি আছে রমজান শুরু হতে। কিন্তু রোজা শুরু হওয়ার আগেই অস্থির হয়ে উঠেছে খেজুরের বাজার। সরকার ১০ শতাংশ শুল্ক ছাড় দেওয়ার পরও নানান অজুহাতে আমদানি মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে পণ্যটি।

জানা গেছে, দেশে প্রতিবছর খেজুরের চাহিদা প্রায় ৫০ হাজার টন। এর মধ্যে অর্ধেক চাহিদা থাকে শুধু রমজানে। রোজা সামনে রেখে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে গত পাঁচ মাসে প্রায় ৩২ হাজার টন শুকনা ও ভেজা খেজুর আমদানি হয়েছে। এসব খেজুরের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশই আমদানি করেছে ২৫টি প্রতিষ্ঠান। ফলে দেশে খেজুরের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে মাত্র দুই ডজন ব্যবসায়ী। তাদের হাতেই জিম্মি ভোক্তারা।

বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এবার প্রতি কেজি খেজুরের গড় দাম পড়ছে প্রায় ৮০০ টাকা। কিন্তু কাস্টমসে প্রদর্শিত আমদানিমূল্য, শুল্ক এবং পরিবহন খরচ যোগ করলে প্রতি কেজি খেজুরের গড় মূল্য দাঁড়ায় সর্বোচ্চ ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা।

বাজারে সৌদি আরবের ‘আজওয়া’ খেজুর ৫ কেজির প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ২০০ টাকায়। গত বছর দাম ছিল ২ হাজার ৬০০ টাকা। মেজদুল (আম্বর) খেজুরের ৫ কেজির প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার ৮০০ টাকায়। গতবার দাম ছিল সাড়ে ৩ হাজার টাকা। একইভাবে মেজদুল (সাধারণ) মানের খেজুর বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৬ হাজার টাকায়। গতবার দর ছিল ৪ হাজার ৫০০ টাকা। মরিয়ম খেজুরের ৫ কেজির প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৪ হাজার টাকায়। গতবার ছিল আড়াই হাজার টাকা।

এ বিষয়ে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর সহসভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেছেন, এবারও পর্যাপ্ত খেজুর আমদানি হয়েছে। সরকার ১০ শতাংশ শুল্কও ছাড় দিয়েছে। তবে মনিটরিংয়ে দুর্বলতা রয়ে গেছে। এর ফলে খেজুরের বাজার ক্রমেই অস্থির হয়ে উঠছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার ডলার রেট বেশি। এ ছাড়া আমদানিও এবার অনেক কম। এজন্য বাজার কিছুটা অস্থির।

তিনি বলেন, খুচরা বাজারে কেউ কেউ দ্বিগুণ দামে খেজুর বিক্রি করলেও পাইকারিতে এটা করার সুযোগ নেই।

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বলেন, খেজুরের দাম কেন লাগামছাড়া, তা খতিয়ে দেখা উচিত। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে দেশের ১৬ কোটি মানুষ কষ্ট পাক, এটা আমরা চাই না।

ক্রেতারা বলেন, বাজার সিন্ডিকেটের জন্য সবকিছুই সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। আর রোজার আগে দাম বাড়ায় আমাদের মতো গরীবদের খেজুর খাওয়ার কথা ভুলেই যাওয়া লাগবে।