এক মেসেজে বেড়ে যায় মুরগি ও ডিমের দাম
![মুরগি](https://citizenjournal24.com/resources/img/article/202402/94901_168.jpg?v=1.1)
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১২ মার্চ শুরু হতে পারে পবিত্র রমজান। তবে এর মধ্যেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। বাদ যায়নি ব্রয়লার মুরগিও। পাইকারদের এক মেসেজে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা বাড়িয়ে দিচ্ছেন দাম। ফলে গত বছরের মতো রোজার আগে বাড়তে শুরু করেছে ব্রয়লারের দাম।
পাইকারী ব্যবসায়ীরা বড় ব্রয়লার কিনছেন ১৬০ ও ছোট ১৭০ টাকা কেজি। কয়েক হাত ঘুরে খুচরা বাজারে তা বাড়ছে কেজিতে ৪০-৫০ টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন থেকে মুরগির বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নয়তো গত বছরের মতো এবারও রমজান মাসজুড়েই অস্থিরতা থাকবে মুরগির বাজারে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, বাজার মনিটরিং ও অভিযান নিয়মিত পরিচালনা করা হচ্ছে। কোনও বাজারে যদি বাড়তি দাম নেয়, তাহলে তা সুনির্দিষ্ট করে জানাতে হবে। তাহলে আমরা অভিযান চালাতে পারব। এছাড়া রমজান মাস ঘিরে আমাদের অভিযান চলছে। সামনে আরও জোরদার হবে।
কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ’র (ক্যাব) কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এসএম নাজের হোসেন বলেন, দাম বাড়বে কি না, সেটা ব্যবসায়ীদের মর্জির ওপর নির্ভর করছে। দাম বাড়ার কোনো মৌলিক কারণ নেই। তাদের ইচ্ছা হলে দাম বাড়াবে বা তাদের ইচ্ছা হলে দাম কমাবে। কারণ, তারা তো কোনো নিয়ম মানছেন না। আবার তদারকিও ঠিকভাবে হচ্ছে না বা তার প্রভাব পড়ছে না।
তিনি আরও বলেন, একসময় ছোট খামারিদের নিয়ন্ত্রণে ছিল পোলট্রি খাত। কিন্তু এখন ছোট খামারিরা লোকসানে পড়ে বসে গেছেন। যার ফলে বড় প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারে প্রভাব রাখছে।
পাইকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, কন্ট্রাক্ট ফার্মগুলো খুব সহজে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কারণ, এসব প্রতিষ্ঠান একই সঙ্গে খাদ্য, মুরগি ও ডিম উৎপাদন করছে। চক্রটি রমজানকে সামনে রেখে বাচ্চার সরবরাহ কমিয়ে দেয়। তখন প্রান্তিক খামারিরা বাচ্চা তোলেন না। এক মাস পর দেখা যায় এর প্রভাবে বাজারে সরবরাহ কমে যায়। এরপর সে সংকট কাটিয়ে বাজারে ফের মুরগি ও ডিম ছাড়ে। এরপর বাজারে বিক্রি কত টাকা হবে তা নির্ধারণ করে দেয়। একটি মেসেজে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পাল্টে যায় মুরগি ও ডিমের দাম। এতে করে কৌশলে বাজারে দাম বেড়ে যাচ্ছে।
নগরের কাজীর দেউড়ি কাঁচা বাজারসহ খুচরা দোকান ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক সপ্তাহ আগে যেখানে ব্রয়লার মুরগি কেজি প্রতি বিক্রি হয়েছে ১৫০-১৭০ টাকা করে, সে মুরগি চলতি সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে বাজার ভেদে ১৮০ থেকে ২২০ টাকা। কাজীর দেউড়ি কাঁচাবাজারকে ভিআইপিদের বাজার বলা হলেও এখানেও ২২০-২৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। অপরদিকে খুচরা পর্যায়ের দোকানগুলোতে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা করে।
হঠাৎ করে দাম কেন বেড়েছে তার কোনো কারণ বলতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা।
বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত বছরের জানুয়ারির শুরুর দিকে মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি। এরপর ফেব্রুয়ারি থেকে বাড়তে শুরু করে মুরগির দাম।মার্চে প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হয় ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা। মূলত প্রতি বছর রমজানকে ঘিরে একটি চক্র ব্রয়লারের দাম বাড়াতে শুরু করে। পোলট্রি ফার্ম থেকে খুচরা বাজার পর্যন্ত এই চক্রের কারণে বাড়তে থাকে ব্রয়লারের দাম।-বিডিপ্রতিদিন