ইপিজেডে শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি নির্ধারণ
দেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) কর্মরত শ্রমিকদের নতুন মজুরি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে খাতভেদে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার ৮০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৪ হাজার ২৫ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া শিক্ষানবিশ শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ধরা হয়েছে ১০ হাজার ১৭৫ টাকা। বর্তমান মজুরি কাঠামোর চেয়ে নতুন এই মজুরি ৫০ শতাংশ থেকে ৫৬ শতাংশ পর্যন্ত বেশি।
চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে নতুন এ মজুরি কার্যকর হয়েছে। ফলে জানুয়ারিতে নতুন কাঠামো অনুযায়ী মজুরি পাবেন শ্রমিকরা।
ইপিজেডে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণে গঠিত ‘ইপিজেড নিম্নতম মজুরি বোর্ড’ এ সুপারিশ করেছে। নতুন মজুরি চূড়ান্ত করে ৭ ডিসেম্বর গেজেট প্রকাশ করে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা)।
প্রকাশিত গেজেটে ইপিজেডভুক্ত বিভিন্ন ধরনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য চারটি তফসিলে ভিন্ন ভিন্ন মজুরি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ‘ক তফসিলে’ রয়েছে পোশাক ও পোশাক উপকরণ, জুতা ও জুতার উপকরণ, চামড়াজাত পণ্য, সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান, তাঁবু ও তাঁবু উপকরণ, প্লাস্টিক পণ্য, খেলনা, ক্যাপ ও হ্যাটস এবং সংশ্লিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠান।
‘ক তফসিলে’ পাঁচটি নিয়মিত গ্রেডের মধ্যে সর্বনিম্ন গ্রেড হেলপার বা সহকারী পর্যায়ে ন্যূনতম ১২ হাজার ৮০০ টাকা মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সর্বোচ্চ হাই স্কিল গ্রেডে ন্যূনতম মজুরি ১৭ হাজার টাকা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
‘খ তফসিলের’ মধ্যে রয়েছে ইলেকট্রনিক ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য, সফটওয়্যার, লেন্স ও গ্লাস পণ্য, মেটাল ও মেটাল কাস্টিং, অটোমোবাইল ও অটো পার্টস, বাইসাইকেল, ভারী শিল্প, প্রসাধনী, নৌকা, গলফ শ্যাফট, ফিশিং ইকুইপমেন্টস ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠান।
গেজেট অনুসারে ‘খ তফসিলের’ প্রতিষ্ঠানগুলোর তিনটি নিয়মিত গ্রেডের মধ্যে সর্বনিম্ন গ্রেড জুনিয়র অপারেটর পর্যায়ে ন্যূনতম ১৪ হাজার ২৫ টাকা মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সর্বোচ্চ সিনিয়র অপারেটর গ্রেডে ন্যূনতম মজুরি ১৫ হাজার ৯৫০ টাকা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
ইপিজেডভুক্ত ‘গ তফসিলের’ মধ্যে রয়েছে টেক্সটাইল, কেমিক্যাল, ডাইং, অয়েল অ্যান্ড রিফাইনারি, কৃষিপণ্য, আসবাব, কাঠ ও বাঁশজাত পণ্য এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠান। আর ‘ঘ তফসিলের’ মধ্যে টেরি টাওয়েল, সোয়েটার, উইগস ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
গেজেট অনুসারে, গ ও ঘ—উভয় তফসিলভুক্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য চারটি নিয়মিত গ্রেডের মধ্যে সর্বনিম্ন গ্রেড আনস্কিলড পর্যায়ে ন্যূনতম ১৩ হাজার ২৫০ টাকা মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সর্বোচ্চ হাই স্কিলড গ্রেডে ন্যূনতম মজুরি ১৭ হাজার টাকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে ‘ঘ তফসিলের’ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ফুরণভিত্তিক বা পিস রেটের শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম ১৩ হাজার ২৫০ টাকা মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ইপিজেডভুক্ত সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে শিক্ষানবিশ শ্রমিকদের জন্য ১০ হাজার ১৭৫ টাকা ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে।
গত নভেম্বর মাসে দেশের ইপিজেডগুলোর বাইরে থাকা প্রতিষ্ঠানের পোশাক শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা চূড়ান্ত করেছে নিম্নতম মজুরি বোর্ড। বর্তমানে ইপিজেডের বাইরের পোশাক শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকা। সেই হিসাবে নতুন মজুরি কাঠামোয় এসব প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের মজুরি বাড়ছে ৫৬.২৫ শতাংশ।