কার্গো ভিলেজে আগুন: ক্ষতির অঙ্ক বাড়ছে, বিমা দাবি নিয়ে উদ্বেগ

ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করল আইডিআরএ, শর্ত পূরণ থাকলে দ্রুত ক্ষতিপূরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক   নিজস্ব প্রতিবেদক  
প্রকাশিত: ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১২ PM

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর বিমা দাবির দ্রুত নিষ্পত্তি নিশ্চিত করতে নেমেছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। সংস্থাটি জানিয়েছে, বিমা পলিসির শর্ত পূরণ থাকলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিপূরণ পেতে কোনো সমস্যায় পড়বেন না। তবে ব্যবসায়ীরা সতর্ক করেছেন, বিমা কোম্পানিগুলো যদি গোঁজামিলের যুক্তি দাঁড় করায়, তারা তা মেনে নেবেন না।

কার্গো ভিলেজে আগুনে ক্ষয়ক্ষতির অঙ্ক ক্রমেই বাড়ছে। বিজিএপিএমইএর সভাপতি মো. শাহরিয়ার জানিয়েছেন, তাদের সদস্যদের ২৩ কোটি টাকার পণ্য পুড়ে গেছে। অন্যদিকে এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এই ঘটনায় প্রায় এক বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয়েছে।

বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির মহাসচিব ড. মো. জাকির হোসেন জানিয়েছেন, শুধু ওষুধ শিল্পের কাঁচামালের ক্ষতি প্রায় ২০০ কোটি টাকার বেশি। এআইটি, ভ্যাটসহ মোট ক্ষতি ২৫০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার মধ্যে হতে পারে। তিনি বলেন, মোট ক্ষতির অঙ্ক এখনও নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি, তবে এটি নিঃসন্দেহে বিশাল।

অন্যদিকে আমদানি-রফতানিকারকরা বলছেন, বিপুল ক্ষতির বড় অংশই বিমার আওতায় রয়েছে। বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম নুরুজ্জামান বলেন, যদি পলিসির আওতায় ১০০ শতাংশ কাভারেজ থাকে, তাহলে ব্যবসায়ীরা নিরাপদ থাকবেন। বিমা কোম্পানিগুলো দাবি পরিশোধ করবে।

তবে ব্যবসায়ীদের দাবি—বিমা কোম্পানিগুলো যেন কোনোভাবেই সময়ক্ষেপণ না করে। ইএবি সভাপতি হাতেম বলেন, কোনো গোঁজামিল বা তালবাহানা আমরা মেনে নেব না। সরকারকেও অনুরোধ করব যেন বিমা দাবির নিষ্পত্তিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।

আইডিআরএর মুখপাত্র সাইফুন্নাহার জানান, রিইনস্যুরেন্স থাকলে কিছু ক্ষেত্রে সময় লাগে, তবে আমরা নির্দেশনা দেব যাতে বিমা কোম্পানিগুলো প্রাথমিকভাবে নিজেদের অর্থে ক্ষতিপূরণ দেয় এবং পরে কাগজপত্রে হিসাব মেলে। এতে ব্যবসায়ীরা দ্রুত আর্থিক সহায়তা পাবেন।

এদিকে বিমা কাভারেজের বাইরে থাকা ব্যবসায়ীদের জন্য বিশেষ তহবিল গঠনের দাবিও উঠেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারের এ উদ্যোগ না এলে ছোট ও মাঝারি রফতানিকারীরা বড় আর্থিক বিপর্যয়ে পড়বেন।