জুনের ৩ দিনেই এল ৬০ কোটি ৪০ লাখ ডলার

পবিত্র ঈদুল আজহা আগামী শনিবার (৭ জুন) উদ্যাপিত হবে। মুসলিমদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় এ উৎসবকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে কোরবানির পশু কেনাবেচা। পাশাপাশি চলছে পরিবারের সদস্যদের জন্য উপহার ও অন্যান্য কেনাকাটার ব্যস্ততা। এ খরচ সামলাতে প্রবাসীরা দেশে পাঠাচ্ছেন বড় অঙ্কের রেমিট্যান্স।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, চলতি জুন মাসের প্রথম তিন দিনেই প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে পাঠিয়েছেন ৬০ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। যা দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা হিসাবে) দাঁড়ায় প্রায় ৭ হাজার ৪২৯ কোটি টাকার বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদুল আজহা সামনে রেখে সাধারণত গরু, ছাগল ও অন্যান্য কোরবানির পশু কেনা, নতুন পোশাক, উপহার এবং পারিবারিক ব্যয়ের জন্য প্রবাসীরা দেশে বেশি বেশি অর্থ পাঠান। এই সময় রেমিট্যান্স প্রবাহে সাধারণত ঊর্ধ্বগতি দেখা যায় এবং এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
অর্থনীতিবিদরা বলেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ শুধু প্রবাসী পরিবারের আয় বাড়ায় না, বরং দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কোরবানির ঈদের সময় গ্রামীণ অর্থনীতি যেমন চাঙা হয়, তেমনি নগদ অর্থের প্রবাহ বাড়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আসে।
এদিকে, সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রণোদনা প্রদান করছে। ডিজিটাল চ্যানেলে অর্থ পাঠানো সহজ হওয়ায় বর্তমানে অনেকেই হুন্ডি এড়িয়ে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করছেন।
এর আগে, গেল মে মাসে দেশে ২৯৭ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাসিক প্রবাসী আয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ছিল ৩৬ হাজার ৫৩১ কোটি টাকারও বেশি।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। এছাড়া, আগস্টে আসে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ডলার এবং মে মাসে ২৯৭ কোটি রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে জুন ৩ পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৮১১ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ২৯ দশমিক ৮০ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরে একই সময় রেমিট্যান্স এসেছিল দুই হাজার ১৬৬ কোটি মার্কিন ডলার।