কোরবানির আগে যে ছবি শেয়ার করে তোপের মুখে ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
বিনোদন জার্নাল বিনোদন জার্নাল
প্রকাশিত: ০৮ মে ২০২৪, ১১:৩৭ AM

ঈদুল ফিতরের ২ মাস ১০ দিন পরেই আসে পবিত্র কোরবানির। ইসলামে এই কোরবানির ফজিলত অনেক। আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পুরস্কার লাভের আশায় নির্ধারিত দিনে ব্যক্তির পশু জবাই করা হলো- কোরবানি। শুধু আত্মত্যাগই নয় বরং আল্লাহর সঙ্গে বান্দার ভালোবাসার অনন্য এক নিদর্শনও কোরবানি। আল্লাহর কাছাকাছি হওয়ার মাধ্যম এ কোরবানি সম্পর্কে কোরআনুল কারিমের একাধিক আয়াতে রয়েছে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা। তাই ঈদুল ফিতরের কিছুদিন পর থেকেই ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা কোরবানি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

আমাদের দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা আত্মত্যাগ হিসেবে গরু ও ছাগল কোরবানি দিয়ে থাকনে। তবে কোরবানি এলেই প্রতিবছর কিছু মানুষের পশুপ্রেম জেগে ওঠে। অনেকের ধারণা ঈচ্ছাকৃতভাবে বিতর্ক সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যেই এমনটি করা হয়। আর সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ছবি শেয়ার করে এমনই এক বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা। যেই ছবিটিতে পিকআপ ভ্যানে রোদে একটি গরুকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ছবিটি পোস্ট করে ক্যাপশনে ভাবনা লেখেন, আমার কান্নার শব্দ কি শোনা যায় তোমার শহরে? 

এরপরই নেটিজেনদের তোপের মুখে পড়েন অভিনেত্রী। অনেকেই ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবনাকে কটাক্ষ করতে শুরু করেন। 

বিষয়টি নিয়ে শুরু থেকেই নীরব থাকলেও এবার মুখ খুলেছেন ভাবনা। এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে সেই ছবি প্রসঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। যেখানে ভাবনা দাবি করেছেন, একজন পশুপ্রেমী হিসেবেই তার সেই ছবিটি শেয়ার করা। 

ভাবনা বলেন, আমি মাঝে মাঝেই ছবি তুলতে পছন্দ করি। যখন কোনও দৃশ্য আমাকে ভাবতে বাধ্য করে, সেটা মাঝে মাঝে ফেসবুকেও শেয়ার করি। আমার একটি ছবি, যেখানে দেখা যাচ্ছে একটি পিকআপ ভ্যানে রোদে দাঁড়িয়ে একটি গরু, তার চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে পানি। সে দিন ছিলো তীব্র দাবদাহ, গরমে দীর্ঘ সময় থাকার ফলে অবলা প্রানীটি ভীষণ ভাবে কাঁদছিলো। বোবা প্রাণের কান্না আমাকে ছুঁয়ে যাচ্ছিল। ছবি তুলে আমার অনুভূতি প্রকাশ করি আমি। ছবিটির ক্যাপশন দিয়েছি ‘আমার কান্নার শব্দ কি শোনা যায় তোমার শহরে!’ ব্যাস এতটুকুই! 

এরপরই নেটিজেনদের কড়া সমালোচনা শুনতে হয়েছে ভাবনাকে। অকাথ্য ভাষায় গালাগাল করতেও ছাড়েননি তারা। বিষয়টি উল্লেখ করে অভিনেত্রী বলেন, তারপর কিছু মানুষ শুরু করলেন আমাকে হেয় করা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখতে শুরু করলেন—আমি চামড়ার ব্যবসায়ী! আমি নিজে একটা গাভী! আমাকে লাথি মারতে মারতে ইন্ডিয়া পাঠানো উচিত! আরও কত নোংরা নোংরা কথা!

ভাবনার মতে, তিনি কেবল অবলা প্রাণীর প্রতি মায়া থেকে কথাটি বলেছেন। এখানে কোনও বিদ্বেষ কিংবা গরুর মাংস খাওয়ার বিরোধিতা করেননি। তার ভাষ্য, ‘আমি কোথাও লিখিনি গরুর মাংস খাই না, বা বলি নি আপনারা গরুর মাংস খাবেন না। একটা প্রাণীর কান্না দেখে যে কেউ কেঁদে উঠতে পারেন এটাই স্বাভাবিক। আর আমি প্রকৃতিপ্রেমী বা প্রাণীপ্রেমী কি না সেটার প্রমাণ আমি কোথাও দেবো না। আমার ফেসবুকের একটি পোস্টেই তো আর প্রমাণ হবে না আমি কে?’

সবশেষে খানিকটা অভিমান প্রকাশ করেই ভাবনা বললেন, ‘অবশ্যই এই ছবিটি নিয়ে আমি আরও লিখবো, হয়তো কোন কবিতায় বা গল্পে বা অন্য কোথাও অথবা আমার পরবর্তী ক্যানভাসে। শিল্পীর বেদনা গুরুত্বপূর্ণ, ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আমার দিকে ছুড়ে দেওয়া সব তীর আমি সাদরে গ্রহণ করলাম।’

ভাবনার সেই পোস্টে অনেকেই অভিনেত্রীর প্রতি সহমর্মিতা জানিয়েছেন। তার সেই ছবির ভুল ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে, এমনটাও মন্তব্য করেছেন।