রুমিন-তারেকের ছবি শেয়ার করায় জামায়াত-বিএনপির সংঘর্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:৩২ PM

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী দুঃশাসনের অবসান হলে মানুষের মাঝে স্বস্তি নেমে আসে। তারা ভেবেছিল এবার দেশটা পরিবর্তন হবে। তবে সাধারণ মানুষের সেই ভুল ভাঙতে খুব একটা দেরি হয়নি। গত এক বছরে দেশব্যাপী অপরাধের স্বর্গরাজ্য বানিয়েছে বিএনপি! এই সময় দেড় শতাধিক মানুষ খুন, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, লুটপাটসহ একাধিক অপরাধ সংঘটিত হয়েছে দলটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান বলেন, গত এক বছরে সাড়ে সাত হাজার নেতাকর্মীকে বিহষ্কার করা হয়েছে বিভিন্ন অপরাধে।

এদিকে বিরোধী মত দমনেরও সক্রিয় দলের নেতাকর্মীরা। এর আগে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের জেরে এনসিপির মঞ্চ ভাঙচুর ও নেতাকর্মীদের মারধর করে যুবদলের নেতাকর্মীরা। এবার বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি বিকৃত করে ফেসবুক পোস্ট দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে সংঘর্ষে জড়িয়েছে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে।

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সকালে উপজেলার পালিশারা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আহতদের হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

উপজেলা যুবদলের সাবেক সদস্যসচিব কাজী জসিম জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ৯ নম্বর গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির ও পালিশারা শাহমিরান মিরা বাড়ী জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা ইলিয়াস হোসেন তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার বিকৃত ছবি শেয়ার করে। শুক্রবার সকালে বিষয়টি জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে নেতাকর্মীদের ওপর জামায়াতের নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা করে।

হামলায় আহত ইউনিয়ন যুবদল নেতা নেছার আহম্মেদ বলেন, হামলায় আমাদের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। অতর্কিত হামলায় আহত হয়ে তারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এদিকে উপজেলা জামায়াত নেতা মাওলানা মোজাম্মেল হোসেন পরাণ পোস্টের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বৃহস্পতিবার রাতেই পোস্ট ডিলিট করা হয়েছে। এমনকি মাওলানা ইলিয়াস হোসেন তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে দুঃখ প্রকাশ করে আরও একটি পোস্ট করেন। তারপরও মসজিদ কমিটি তাকে নিয়ে সকালে একটি বৈঠকে বসার প্রস্তুতি নেয়। ওই সময় বিএনপি নেতা নেছার আহম্মেদের নেতৃত্বে ইলিয়াসের উপর হামলা করে। ওইসময় বিএনপি নেতাকর্মীদের সামাজিকভাবে প্রতিরোধ করতে গেলে জামায়াতের ১০/১২ জন নেতাকর্মী আহত হয়।

জানতে চাইলে ইউনিয়ন জামায়াতের আমির ও পালিশারা শাহমিরান মিরা বাড়ী জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা ইলিয়াস হোসেন সংবাদকর্মীদের বলেন, আমার ফেসবুক আইডি থেকে ছবিটি অসাবধনাবশত শেয়ার হয়েছে। বিষয়টি কয়েকজন আমাকে জানানোর পর ডিলিট করে দিয়েছি। ঘটনা যা হয়েছে, ফেসবুকে পোস্ট করে পরে দুঃখ প্রকাশ করেছি। তারপরও শুক্রবার সকালে বৈঠকে বসার আগে নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে বিএনপির নেতাকর্মীরা।

হাজীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, জামায়াত বিএনপির মারামারির ঘটনা জেনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।