ফের চাঁদাবাজদের তালিকা; এলাকায় তোলপাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৯:৪৪ AM

রাজশাহীতে সম্প্রতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে একটি ‘চাঁদাবাজদের তালিকা’। শুরুতে স্বাক্ষরহীন একটি তালিকা ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে ১২৩ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই তালিকায় বিএনপির সবচেয়ে বেশি নাম ছিল, এরপর আওয়ামী লীগ আর সবচেয়ে কম জামায়াতের। এবার প্রকাশিত হয়েছে পুলিশের এক কর্মকর্তার স্বাক্ষরযুক্ত আরেকটি তালিকা, যা নতুন করে বিতর্ক ও আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

এই তালিকাটি রাজশাহীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মোস্তাক আহমেদের স্বাক্ষরসহ ২১ জুলাই তারিখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়। এতে থানার আওতাধীন এলাকার ২০ জনের নাম রয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, “সূত্রে বর্ণিত স্মারকের আলোকে জনমনে আতঙ্ক ও নিরাপত্তা বিঘ্নকারী চাঁদাবাজদের একটি তালিকা প্রেরণ করা হলো।”

অনেকেই মনে করছেন, রাজশাহী মহানগর পুলিশের প্রতিটি থানা থেকে এ ধরনের তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তা স্বীকার করা হয়নি।

এর আগে ছড়িয়ে পড়া ১২৩ জনের তালিকায় রাজনৈতিক পরিচয় স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল। কিন্তু ওসি মোস্তাক আহমেদ স্বাক্ষরিত তালিকায় দলীয় পরিচয় শুধু একজনের ক্ষেত্রেই উল্লেখ করা হয়েছে। তবে দুটি তালিকার মধ্যে মিল রয়েছে।বোয়ালিয়া থানা এলাকার বেশিরভাগ নাম একই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি মোস্তাক আহমেদ বলেন, “তালিকায় আমার স্বাক্ষর কে বা কারা ব্যবহার করেছে, আমি জানি না।”

রাজশাহী মহানগর পুলিশের মিডিয়া শাখার অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার গাজিউর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, “এভাবে যদি তালিকা তৈরি হয়ে থাকে, তাহলে তো সব থানায়ই এমন তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না, ওসির স্বাক্ষরও চিনি না।”

বোয়ালিয়া থানার তালিকাভুক্তদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, হুমকি, মব তৈরি করে পুলিশে সোপর্দ করা এবং চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। তালিকায় নাম আছে স্থানীয় বিএনপি নেতা ইকবাল হোসেন দিলদারের। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “এই তালিকা শত্রুতা করে তৈরি করা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযোগ কখনো ছিল না।”

সম্প্রতি বোয়ালিয়া থানায় ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে মোস্তাফিজুর রহমান নামে একজন মামলা করেন। সেখানে ৩৬ জনকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে ১৮ জনের নাম ছড়িয়ে পড়া তালিকার সঙ্গেও মিলে গেছে।

এই মামলার প্রতিবাদে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠন সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করে, চাঁদাবাজদের তালিকা পুলিশেরই তৈরি। বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানা বিএনপির সভাপতি শামসুল হোসেন মিলু বলেন, “তালিকায় পুলিশের স্বাক্ষর রয়েছে, এটা আমি নিজে দেখেছি।” 

যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে এ ধরনের তালিকা তৈরির বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে।