আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা
পূর্বাচলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৮তম আসর শুরু হচ্ছে কাল থেকে। উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। থাকবে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বঙ্গবন্ধু টানেলের আদলে নির্মাণ করা হয়েছে প্রধান ফটক। তুলে ধরা হয়েছে সরকারের উন্নয়নের নানা চিত্র। স্টলে-স্টলে শেষ মুহূর্তের সাজসজ্জা।
এবারের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ১০ ক্যাটাগরিতে থাকছে ৩০০টি স্টল, ২৩টি প্যাভিলিয়ন। থাকছে ২৭টি মিনি প্যাভিলিয়নও। বিদেশি স্টল আছে ১২টি। অত্যাধুনিক শিশু পার্কের ব্যবস্থাও এবার থাকছে।
মেলা ঘিরে থাকছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সিসি ক্যামেরার পাশাপাশি থাকছে ওয়াচ টাওয়ার ও পুলিশ কন্ট্রোল রুম। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ইজারাদারের পক্ষ থেকেও মাঠে থাকবে স্বেচ্ছাসেবক টিম।
দর্শনার্থীদের জন্য রাজধানীর কুড়িল থেকে ৫০টি বিআরটিসি শাটল বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের আশা-জমজমাট হবে এবারের আয়োজন। বাণিজ্য মেলায় বড়দের প্রবেশের টিকেটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ ও শিশুদের জন্য ২৫ টাকা।
প্রসঙ্গত, ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা হল বাংলাদেশে আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ইরান, জাপান, চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও দেশের প্রতিষ্ঠান মেলায় নিজেদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন করে। দেশি ও বিদেশি পণ্যসামগ্রী প্রদর্শন, রপ্তানি বাজার অনুসন্ধান এবং দেশি-বিদেশি ক্রেতার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে এ মেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিল্পপণ্য ও ভোগ্যপণ্য উত্পাদনকারীরা একদিকে তাদের উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান, নকশা, প্যাকেজিং ইত্যাদি প্রদর্শন ও বিপণন করতে পারেন, অন্যদিকে পারস্পরিক সংযোগ স্থাপনসহ অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রসারের সুযোগ লাভ করে। এ মেলা প্রতিবছর জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হয়।
২০২১ পর্যন্ত এই বাণিজ্য মেলা শেরে বাংলা নগরে আয়োজিত হত। ২০২২ থেকে এই বাণিজ্য মেলা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে আয়োজিত হচ্ছে। পূর্বাচল ৪ নম্বর সেক্টরে ২০ একর জমির ওপর স্থায়ী বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করে চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন। ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর নির্মাণ কাজ শেষ করে। এটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৭৭৩ কোটি টাকা, যার মধ্যে চীন সরকারের অনুদান ৫২০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সরকার ২৩১ কোটি ও ইপিবির নিজস্ব তহবিল থেকে ২১ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়।
এ প্রদর্শনী কেন্দ্রের মোট ফ্লোর স্পেস ৩৩ হাজার বর্গমিটার। ভবনের মোট ফ্লোর স্পেস ২৪ হাজার ৩৭০ বর্গমিটার। এক্সিবিশন হলের মোট আয়তন ১৫ হাজার ৪১৮ বর্গমিটার। দোতলা পার্কিং ভবনে ৭ হাজার ৯১২ বর্গ মিটার জায়গায় ৫০০ গাড়ি রাখা যাবে। এছাড়া প্রদর্শনী ভবনের সামনে খোলা জায়গায় আরও এক হাজার গাড়ি পার্ক করা যাবে। প্রদর্শনী হলে ৮০০টি স্টল বুথ রয়েছে। প্রতিটি বুথের আয়তন ৯.৬৭ বর্গমিটার। এখানে ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৬তম আসর শুরু হয়।