উৎসাহ-আমেজে শুরু ডাকসুর ভোটগ্রহণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৫৬ AM

উৎসাহ আর আমেজে বহুল প্রতিক্ষীত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ, টানা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টি কেন্দ্রে ৮১০টি বুথে চলছে ভোটগ্রহণ।

গত রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) ছিল প্রচারণার শেষ দিন। সারাদিন ক্যাম্পাসজুড়ে ছিল প্রার্থীদের সরব উপস্থিতি, লিফলেট বিতরণ ও প্রচার-প্রচারণা। টিএসসি, মধুর ক্যান্টিন, অনুষদ ভবন ও আবাসিক হলগুলোতে কর্মীদের সরগরম পদচারণায় মুখর ছিল বিশ্ববিদ্যালয়।

এবারের নির্বাচনে ডাকসুর ২৮টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৪৭১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে নারী প্রার্থী ৬২ জন। সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নারী প্রার্থীদের মধ্যে ভিপি পদে ৫ জন, জিএস পদে একজন ও এজিএস পদে ৪ জন প্রার্থী রয়েছেন।

এবার ভোট দেবেন মোট ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র ভোটার ২০ হাজার ৮৭৩ জন এবং ছাত্রী ভোটার ১৮ হাজার ৯০২ জন।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টি কেন্দ্রে ৮১০টি বুথে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে। বিকেল ৪টার মধ্যে কেন্দ্রে লাইনে দাঁড়ানো শিক্ষার্থীরা ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন।

ডাকসু নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা ওএমআর শিটে পছন্দের প্রার্থীর ব্যালটের পাশে থাকা ঘরে ক্রস চিহ্ন এঁকে ভোট দিতে পারবেন। বিকেলে ভোটগ্রহণ শেষে শুরু হবে গণনা। অত্যাধুনিক মেশিনে এ ভোট গণনা করা হবে। ফলে রাতের প্রথম অংশেই ঘোষণা করা হবে ফলাফল। ফল ঘোষণা করা হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে। কেন্দ্রীয় সংসদের জন্য পাঁচ পাতার ব্যালট পেপার থাকবে। আর হল সংসদের জন্য থাকবে এক পাতার ব্যালট। সব মিলিয়ে একজন ভোটারের ভোট গুনতে হবে ছয় পাতার ব্যালটে। আটটি ভোটকেন্দ্রে মোট ১৪টি অত্যাধুনিক মেশিন থাকবে। ভোটগ্রহণ শেষে এসব মেশিনে নির্ভুলভাবে ভোট গণনা করা হবে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ডাকসুর চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, আমরা অত্যাধুনিক মেশিনে ভোটগুলো গণনা করবো। খুব বেশি সময় লাগবে না। কোনো সন্দেহ-সংশয় থাকলে একাধিকবারও গণনা করা যেতে পারে। ছয় পৃষ্ঠার অপটিক্যাল মার্ক রিকগনিশন (ওএমআর) ফরমে ডাকসু ও হল সংসদের ভোটগ্রহণ হবে। কেন্দ্রীয় সংসদের ভোটের জন্য যে ব্যালট থাকবে, তাতে পৃষ্ঠা থাকবে পাঁচটি। আর হল সংসদের ওএমআর শিট হবে এক পৃষ্ঠার। ভোটারপ্রতি ব্যালট পেপারের পৃষ্ঠা থাকবে ছয়টি।

তিনি আরও বলেন, আমরা যে মেশিন ব্যবহার করবো, তার কোনোটির স্ক্যানিং স্পিড থাকবে ঘণ্টায় ৫০০০ পাতা, আবার কোনোটির স্ক্যানিং স্পিড ৮০০০ পাতা। ভোটারপ্রতি ছয় পাতার ব্যালট হিসাব করলে দেখা যাবে, যে মেশিনগুলোর স্পিড ঘণ্টায় ৫০০০ পাতা, সেগুলো দিয়ে ৮০০ থেকে ৮৫০ জন ভোটারের ব্যালট গণনা করা যাবে। আবার যে মেশিনে ঘণ্টায় ৮০০০ পাতার স্পিড, তা দিয়ে ঘণ্টায় ১৩০০-১৩৫০ ভোটারের ব্যালট গোনা হয়ে যাবে।

ডাকসুর চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা আরও বলেন, সর্বনিম্ন হিসাবটা ধরলেও আমরা ঘণ্টায় ১২ হাজার ভোটারের দেওয়া ভোট (৬ পৃষ্ঠার ব্যালট) গুনে ফেলতে পারবো। যদি ৩০ হাজার ভোট পড়ে তাহলে তো আমাদের লাগবে বড়জোর তিন ঘণ্টা। যদি কোথাও রিপিট গণনা করি, তাহলে হয়তো আরও কিছু সময় লাগতে পারে। সেজন্য আমরা বলেছি, রাতের প্রথমাংশেই ফল ঘোষণার প্রস্তুতি আমাদের আছে। বাকিটা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবো।

প্রসঙ্গত, তফসিল অনুযায়ী মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে। ক্যাম্পাসের ৮টি কেন্দ্রে ভোট দিতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। নির্বাচনে একজন ভোটারকে মোট ৪১টি ভোট দিতে হবে। কেন্দ্রীয় সংসদে ২৮টি, হল সংসদে ১৩টি পদে। ডাকসুতে মোট ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন ভোটারের মধ্যে ছাত্রী ভোটার ১৮ হাজার ৯৫৯ জন এবং ছাত্র ২০ হাজার ৯১৫ জন। নির্বাচনে ২৮ পদের বিপরীতে লড়ছেন মোট ৪৭১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে পুরুষ প্রার্থী ৪০৯ জন ও নারী প্রার্থী ৬২ জন।