আফ্রিদি থাকায় খেলল না যুবরাজরা; ম্যাচ বাতিল
-1201029.jpg?v=1.1)
চলতি বছরের এপ্রিলে কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আবারও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে। এই রাজনৈতিক টানাপড়েনের প্রভাব এবার পড়েছে ক্রিকেট অঙ্গনেও।
এর অংশ হিসেবে ইংল্যান্ডের এজবাস্টনে অনুষ্ঠিত 'ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লেজেন্ডস'-এ পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটাররা। ফলে ম্যাচটি বাতিল করা হয়েছে।
রোববার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর হাইভোল্টেজ লড়াই। সাধারণত সাবেক তারকাদের এমন ম্যাচ ঘিরে ক্রিকেট ভক্তদের মধ্যে বাড়তি উন্মাদনা দেখা দেয়। তবে এইবার পরিস্থিতি ভিন্ন। কাশ্মীর ইস্যুতে সামরিক উত্তেজনার সময় শহীদ আফ্রিদি ও শিখর ধাওয়ানের মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে বাকযুদ্ধ চরমে ওঠে। জিও সুপার জানিয়েছে, সেই ঘটনার রেশ ধরেই ভারতীয় দল জানিয়ে দেয়—আফ্রিদি মাঠে থাকলে তারা খেলবে না।
যুবরাজ-হরভজন-ইরফানদের আপত্তির পর ‘ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লেজেন্ডস’ (ডব্লিউসিএল) কর্তৃপক্ষ ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ বাতিলের ঘোষণা দেয়। বিবৃতিতে তারা জানায়, ‘আমরা ডব্লিউসিএলে সবসময় ক্রিকেটকে লালন ও ভালোবাসার দৃষ্টিতে দেখি। এখানে আমাদের কেবল লক্ষ্য থাকে ক্রিকেটভক্তদের ভালো ও সুখী মুহূর্ত উপহার দেওয়া। যখন আমরা চলতি বছরে পাকিস্তান হকি দলের ভারতে সফরের খবর পাওয়ার পাশাপাশি পরস্পরের সাম্প্রতিক ভলিবল ম্যাচ দেখি, তখন ডব্লিউসিএলেও পাক-ভারত ম্যাচ চালিয়ে যাওয়ার কথা ভেবেছি।’
ক্রিকেটারদের মনস্তাত্ত্বিকভাবে আঘাতের কারণ হওয়ায় ক্ষমাও চেয়েছে ডব্লিউসিএল কর্তৃপক্ষ, ‘আমাদের উদ্দেশ্যই ছিল কেবল বিশ্বের ক্রিকেটভক্তদের জন্য কিছু আনন্দঘন মুহূর্তের সৃষ্টি। যাইহোক, এখন আমরা ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা কারও অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী এবং আমাদের প্রত্যাশা এই ম্যাচ আয়োজনের উদ্দেশ্য সবাই বুঝতে পারবেন।’
এর আগে সাবেক ভারতীয় ওপেনার শিখর ধাওয়ান আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছিলেন, তিনি পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ খেলবেন না। সামাজিক মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি পোস্ট শেয়ার করে তিনি লেখেন, ‘আমি যে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলব না, তা গত ১১ মে জানিয়েছি। সেই অবস্থানেই অনড় রয়েছি এখনও। আমার দেশই আমার কাছে সবকিছু, দেশের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেই।’ এরপর হরভজন সিং, ইরফান পাঠান, সুরেশ রায়না এবং ইউসুফ পাঠানরাও এই ম্যাচের অংশ হতে চান না বলে জানান।
গড় ১৮ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে লেজেন্ডস চ্যাম্পিয়নশিপ। যেখানে ভারতীয় দলের অধিনায়ক যুবরাজ সিং এবং পাকিস্তানের নেতৃত্বে আছেন মোহাম্মদ হাফিজ। এর আগে কাশ্মীরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শহীদ আফ্রিদি স্বদেশি চ্যানেল সামা টিভিকে বলেন, ‘যদি সেখানে (কাশ্মীর) একটি পটকাও ফাটে, তুমি পাকিস্তানকে দায়ী করো। অথচ কাশ্মীরে তোমাদের আট লাখ শক্তিশালী সেনাবাহিনী রয়েছে, তবুও এমন ঘটনা ঘটছে। এর মানে তোমাদের আর্মি অকেজো, তারা নিজেদের মানুষকে রক্ষা করতে পারে না।’
যা নিয়ে নিজের এক্স অ্যাকাউন্টে প্রতিক্রিয়া দেখান শিখর ধাওয়ান, ‘কার্গিলেও তোমাদের হারিয়েছিলাম। এত নীচে নেমেছ, আর কত নামবে? উল্টোপাল্টা মন্তব্য করার চেয়ে নিজের দেশের ভাল হয় এমন কোনো কাজ করো। ভারতীয় সেনাদের নিয়ে আমরা গর্বিত।’ পরে আফ্রিদিও নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে ধাওয়ানকে খোঁচা দিয়ে আরেকটি টুইট করেন। যেখানে হাতে চা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছবি দিয়ে তিনি লেখেন, ‘জয়-পরাজয় ভুলে যাও, আসো তোমাকে চা পরিবেশন করি।’